১২ দিনেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত স্কুলছাত্রী
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ১২ দিন পরও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে মামলা তুলে নিতে ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
১৬ মার্চ বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে উপজেলার দক্ষিণ দেউলাবাড়ী এলাকার বখাটে মো. সোহেল রানা (২০) ও তাঁর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে যান বলে অভিযোগ করে ওই ছাত্রীর পরিবার। এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে।
মামলার এজাহার ও ওই ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক বছর ধরে বখাটে সোহেল রানা ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। এই বিষয়টি ওই ছাত্রী তার পরিবারের সদস্যদের জানায়। ১৬ মার্চ ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে যায়। পরে বাড়ি ফেরার পথে ওই বখাটে ও তাঁর লোকজন ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের কাছে পরিবার জানতে পারে, ওই ছাত্রীকে বখাটে সোহেল ও তাঁর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে গেছেন। টানা তিন দিন স্থানীয়ভাবে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় ১৯ মার্চ ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলার আট দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি।
ওই ছাত্রীর মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়ে খুবই ছোট। মাত্র সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলে যাতায়াতে বখাটে সোহেলের উত্ত্যক্তের কথা প্রায়ই সে আমাকে বলত। পরে একদিন আমার এক দেবর ওই বখাটেকে নিষেধও করেছিলেন। কিন্তু ওই বখাটে তা–ও বিরক্ত করতেন। মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে, আমরা এটা বুঝতে পারেনি। অপহরণের তিন দিন পর্যন্ত ওই বখাটের আত্মীয়স্বজনের কাছে কতই না অনুরোধ করেছি আমার মেয়েটাকে দিয়ে দিতে। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। মেয়েটা এখন কী অবস্থায় আছে, সেটাও আমরা জানি না। পরে বাধ্য হয়ে থানার মামলা করেছি। কিন্তু পুলিশ এখনো আমার মেয়েটাকে উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েটাকেই চাই। বখাটের পরিবার এখন মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না দিলে নাকি মেয়েকে কোনো দিনও দেবে না।’
এ বিষয়ে জানতে সোহেলের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা সবাই পলাতক রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ নিমু মিয়া (৫৮) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি ওই আসামির দূরসম্পর্কের দাদা হয়। এ ছাড়া ওই ছাত্রীকে উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা যাবে।’