সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ
রাজধানীর দোলাইরপাড়ে বেপরোয়া বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং কাটা পড়া পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বহন করতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে ৩১ মার্চ আদালতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রাসেল সরকারের পা হারানোর পর গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকারদলীয় সাবেক সাংসদ আইনজীবী উম্মে কুলসুম হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের শুনানিতে ৬ মার্চ রাসেল আদালতকে বলেছিলেন, পা হারানোর পর এখন পর্যন্ত গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ তাঁকে একটি টাকাও দেয়নি। খোঁজখবর নেয়নি, চিকিৎসার ব্যয়ও বহন করেনি।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে রাসেল সরকারকে কেন এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আসে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। গ্রিন লাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ওজি উল্লাহ ও আফরোজা খানম।
রাসেল সরকার একটি প্রতিষ্ঠানের ভাড়া গাড়ি চালাতেন। গত বছরের ২৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়ালসড়কে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারান।
ঘটনার পর রাসেল বলেছিলেন, ফেরার সময় যাত্রাবাড়ীতে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাস তাঁর গাড়িকে ধাক্কা দেয়। পরে গাড়ি থামিয়ে বাসের সামনে গিয়ে বাসচালককে নামতে বলেন তিনি। তখন তাঁর সঙ্গে বাসচালকের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাসচালক গাড়ি চালাতে শুরু করেন। তখন রাসেল সরতে গেলে উড়ালসড়কের রেলিংয়ে আটকে যান। এ সময় রাসেলের পায়ের ওপর দিয়ে বাস চলে যায়। এরপর অস্ত্রোপচার করে তাঁর বাঁ পা কেটে ফেলা হয়।
এ ঘটনায় রাসেল সরকারের বড় ভাই আরিফ সরকার বাসচালক কবির মিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় গত বছরের ২৮ এপ্রিল মামলা করেন।