বিজয়ী নুরুলের নাম শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্রলীগ
ডাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হিসেবে নুরুল হকের নাম ঘোষণা করতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্রলীগ।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান ডাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন।
ভিপি পদে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করতেই বিক্ষোভ শুরু করেন উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
ভিপি পদে নির্বাচিত নুরুল হক কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী।
নুরুল হকের নাম শুনেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘শেইম’ ‘শেইম’ বলে জোরে দুয়োধ্বনি দেন। মিনিট পাঁচেক ধরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান।
বিক্ষোভ কিছুটা কমে এলে ডাকসু নির্বাচনে বাকি পদে বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন উপাচার্য।
বিজয়ীদের মধ্যে যখন নিজেদের কোনো প্রার্থীর নাম আসছিল, তখন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হাততালি দিয়ে ফলকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন।
পুরো ফল ঘোষণা শেষ হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ফের বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদে সিনেট ভবনের যেখানে ফল ঘোষণা করা হচ্ছিল, সেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
চিৎকার, চেঁচামেচি, হট্টগোল ছড়িয়ে পড়ে পুরো কক্ষে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্য অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সিনেট ভবন ছেড়ে ক্যাম্পাসে বেরিয়ে পড়েন। তাঁরা বিক্ষোভ-মিছিল বের করেন।
বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যান। তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
দীর্ঘ ২৮ বছর ১০ মাস পর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উৎসাহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু গতকাল ভোটের দিনে বেশ কিছু অনিয়মের কারণে তা অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগ বাদে প্রায় সব প্যানেল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। ফল ঘোষণা নিয়েও গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষায় রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত রাত সোয়া তিনটায় ঘোষিত ফলে দেখা যায়, ভোট বর্জন করেও সহসভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল হক। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানী। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন। ডাকসুর মোট ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই ছাত্রলীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
১৮টি হল সংসদের মধ্যে ১২টিতে ভিপি পদে জয়ী হয়েছে ছাত্রলীগ। বাকি ছয়টি হলে ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ছাত্রদের হলে ছাত্রলীগ প্রায় একচেটিয়া জয় পেলেও ছাত্রীদের পাঁচটি হলের মধ্যে চারটিতেই হেরেছে তারা।