নতুন কেনা গাড়িতে ঘুরতে বের হন পাঁচ বন্ধু
নতুন কেনা গাড়ি নিয়ে বেড়াতে বের হয়ে আর ফেরা হলো না পাঁচ বন্ধুর। খুলনার রূপসা ব্রিজ এলাকায় গতকাল রোববার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তাঁরা। নিহত সবার বাড়ি গোপালগঞ্জ। তাঁরা স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।
গতকাল সদর থানা যুবলীগের সহসভাপতি সাদিকুল আলমের সদ্য কেনা প্রাইভেট কারে খুলনায় বেড়াতে যান পাঁচ বন্ধু। রাত পৌনে ১২টার দিকে খুলনা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে ফেরার পথে রূপসা ব্রিজের কাছে লবণচরা হরিণটানা এলাকায় পৌঁছালে সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে প্রাইভেট কারটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পাঁচ বন্ধু। সাদিকুলই ছিলেন চালকের আসনে।
নিহত পাঁচজন হলেন সদর উপজেলার সবুজবাগের ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে গোপালগঞ্জর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক বাবু (২৬), সদর উপজেলার সবুজবাগের মৃত আলাউদ্দিন সিকদারের ছেলে ও সদর থানা যুবলীগের সহসভাপতি সাদিকুল আলম (৩২), থানাপাড়ার গাজী মিজানুর রহমান হিটুর ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের ছাত্র উপবৃত্তি–বিষয়ক সম্পাদক গাজী ওয়ালিদ মাহমুদ উৎসব (২৫), গেটপাড়ার রসুলপাড়ার আলমগীর হোসেনের ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সাজু আহমেদ (২৪), চাঁদমারি রোডে অহিদ গাজীর ছেলে ও সদর উপজেলা ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অনিমুল ইসলাম (২৪)।
সাদিকুল ছাড়া সবাই স্থানীয় কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পাঁচ নেতার লাশ বাড়িতে পৌঁছানোর পর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পাঁচ নেতার মৃত্যুতে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আজ সোমবার বাদ জোহর গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে নিহত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
শহরের থানাপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় নিহত গাজী ওয়ালিদ মাহমুদ উৎসবের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় গোটা পরিবার। উৎসব জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী মিজানুর রহমানের ছেলে ও প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার গাজী হাফিজুর রহমানের ভাইয়ের ছেলে।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বলেন, ‘এই মর্মান্তিক মৃত্যু গোপালগঞ্জবাসীকে মর্মাহত করেছে। এই মৃত্যুতে গোপালগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আজ যে পাঁচটি ছেলে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, তাদের সামনে সোনালি স্বপ্ন ছিল। তাদের মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগ পাঁচজন ভবিষ্যৎ মেধাবী নেতা হারাল।’
লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পাঁচ বন্ধু একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে খুলনায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। গাড়িটি খুলনা মহানগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে গোপালগঞ্জ ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তিনি বলেন, খেজুরবাগান অতিক্রম করার সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি গাড়ির সামনে এসে পড়ে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মোংলা থেকে আসা সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়িটির সংঘর্ষ হয়।