ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে চায় এরশাদের ছাত্রসমাজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজ। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতাদের দাবি, ছাত্রলীগের সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই নির্বাচনী প্যানেলের বিষয়ে সাংগঠনিক অবস্থান জানাবেন নেতারা। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন—কারও দিক থেকেই তাঁদের প্রতি কোনো বাধা নেই।
ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা চেয়ে গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছে জাতীয় ছাত্রসমাজ। ছাত্রলীগ বলছে, ছাত্রসমাজ ক্যাম্পাসে ‘নৈতিকভাবে নিষিদ্ধ’ এবং সংগঠনটিকে প্রতিহত করার জন্য তাঁরা প্রস্তুত। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের ছাত্রনেতারা বলছেন, ছাত্রসমাজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ৷
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকা দূরে থাক, ওদের প্রতিহত করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। নৈতিকভাবে তারা নিষিদ্ধ। সেদিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালানোর অধিকার তাদের নেই। ওদের সঙ্গে জোট করা দূরে থাক, ছাত্রসংগঠন হিসেবেই তাদের আমরা স্বীকার করি না।’
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদ স্বৈরাচার ও রাজাকারদের সহযোগীদের নিষিদ্ধ করেছে। তখন থেকে ছাত্রসমাজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ একটি সংগঠন।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ছাত্রসমাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ কি না, তা তিনি বলতে পারছেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে বিষয়টি আলাপ করার পরামর্শ দেন তিনি।
ছাত্রসমাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ কি না, জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘প্রশ্নটি খুব আপত্তিকর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ছাত্রসংগঠনের জন্মও দেয় না, কাউকে নিষিদ্ধও করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো ছাত্রসংগঠনের সাংঘর্ষিক অবস্থানও নেই। যে যার আদর্শ নিয়ে কাজ করে। আমরা কাউকে বাদও দিই না, অন্তর্ভুক্তও করি না।’
ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান জিসান উদ্দিন প্রধান দাবি করেন, ‘ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন—কারও দিক থেকেই আমাদের প্রতি কোনো বাধা নেই। সবাই বলেছে, আপনারা ক্যাম্পাসে আসেন, কার্যক্রম চালান। ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা হয়েছে, তবে প্যানেলের ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। তারা যদি আমাদের সহযোগী হিসেবে নিতে চায়, আরও আলোচনা সাপেক্ষে সেটি হবে।’
বাধা না থাকলে উপাচার্য বরাবর আবেদনের কারণ কী—জানতে চাইলে সুলতান জিসান উদ্দিন প্রধান বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের জন্য কোনো বাধা আছে কি না, সেটা জানার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন জানিয়েছি। কোনো বাধা দেখা গেলে আমরা উচ্চ আদালতে রিট করে জানতে চাইতাম, কেন আমাদের অংশ নিতে দেওয়া হবে না? আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি। তাহলে কেন আমরা বঞ্চিত হব?’