>জোনায়েদ সাকির প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা। ১১৫ আসনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থিতা চূড়ান্ত।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বেশির ভাগ শীর্ষ নেতা প্রার্থী হচ্ছেন না। তাঁরা নির্বাচনের প্রচার ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। বাম জোট থেকে ২০০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ১৬০ থেকে ১৬৫টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১৫টি আসনে একক প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে এই জোট।
আটটি বাম দলের জোট বাম গণতান্ত্রিক জোটের সবচেয়ে বড় দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্ক্সবাদী) শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত জানা গেছে। তবে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির নির্বাচনে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা আছে। এ বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে এ সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
জানতে চাইলে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দল যৌথ নেতৃত্বে বিশ্বাসী। আন্দোলন স্থগিত করে নির্বাচন করার পক্ষপাতী আমরা না। তবে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির এক-তৃতীয়াংশ নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাজপথের আন্দোলন ও নির্বাচন সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।’
সূত্র বলেছে, সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সম্পাদক খালেকুজ্জামান, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) শুভ্রাংশু চক্রবর্তী ও মবিনুল হায়দার চৌধুরী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ অন্য তিনটি বাম দলের শীর্ষ নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
‘ভিশন মুক্তিযুদ্ধ ৭১’ স্লোগান সামনে রেখে সিপিবি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দলটির নির্বাচনী ইশতেহারও ওই আলোকে তৈরির কাজ চলছে। ২৯ নভেম্বর তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
বাম জোটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রার্থী মনোনয়নও চূড়ান্ত করেছে সিপিবি। দলটি এককভাবে ৮২ আসনে প্রার্থী দিচ্ছে। এরপর বেশি প্রার্থী রয়েছে বাসদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্ক্সবাদী)। সিপিবির নিজস্ব প্রতীক কাস্তে, বাসদ মই, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীরা কুড়াল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়াবেন। বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও জোটের অন্য চার বাম দলের মধ্যে যে তিনটি দলের নিবন্ধন আছে, তাঁরা নিজেদের প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তবে গণসংহতি কোন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য হাসান মারুফ রুমি, জুলহাসনাইন বাবু নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত রয়েছে।
জোনায়েদ সাকি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত নির্বাচনে সব দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি হয়নি। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা আমাদের দলের রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমরা চলতি সপ্তাহের মধ্যে জানাব।’
বাম জোটের দলগুলোর নেতারা বলছেন, একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য যেসব শর্ত ও পরিস্থিতি থাকা উচিত, তা এখনো দেশে নিশ্চিত হয়নি বলে তাঁরা মনে করছেন। তবে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁরা নির্বাচনে যাচ্ছেন। এ কারণে নির্বাচনে দাঁড়ানো ও আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন বাম জোটের নেতারা।