অধ্যাদেশ জারির চার দিনের মাথায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বিধিমালা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং শেষে তা গেজেট আকারে জারি করবে ইসি সচিবালয়।
আজ রোববার কমিশনের ৩৮তম মুলতবি সভায় ইভিএম বিধিমালা চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান।
বেলা তিনটায় মুলতবি সভা শুরু হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এ সভা। তফসিল কবে নাগাদ হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরেক দফা কমিশন বসবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
ইভিএম বিধিমালা জারির মাধ্যমে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের বিধি সংশোধন চূড়ান্ত হচ্ছে। ইভিএম বিধিমালা পাওয়ায় সংসদ নির্বাচনে এর ব্যবহারের সার্বিক বিষয় চূড়ান্ত হলো।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ইভিএম চালুর ৮ বছর পর প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে এ প্রযুক্তি ব্যবহার হবে। ২০১০ সালের জুন মাসে স্বল্প পরিসরে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ইভিএম চালু হয়। ২০১৫ সালের এসে ওই ইভিএম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময় ডিজিটালাইজড সুবিধা–সংবলিত নতুন ইভিএম তৈরি করে ইসি। ২০১৬ সালে রংপুর সিটি নির্বাচনে তা চালু হয়। এর দু্ই বছরের মাথায় সংসদে নতুন প্রযুক্তিটি চালু হচ্ছে।
‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএম বিধিমালা ২০১৮’এ রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার, ভোট গণনা, ফল একীকরণসহ নানা বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বলছে, আইনি ভিত্তি পাওয়ার পর স্বল্প পরিসরে এ প্রযুক্তি ব্যবহার হবে। কটি কেন্দ্রে তা ব্যবহার করা হবে, তা কমিশনই চূড়ান্ত করবে। দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে এসব কেন্দ্র বাছাই করা হবে বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন সিইসি।
এ সপ্তাহের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনর তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। জাতির উদ্দেশ্যে সিইসির দেওয়া ভাষণে ভোটের তারিখ ও ইভিএম নিয়ে বিস্তারিত থাকবে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
যেভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হবে:
স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হয়েছে রংপুর, খুলনা, গাজীপুর ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে। আঙুলের ছাপ, ভোটার নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা স্মার্ট পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভোটার শনাক্ত করা হয়।
নির্দিষ্ট কেন্দ্রের ভোটকক্ষে একজন করে ভোটার ভেরিফিকেশন করেন পোলিং অফিসার। ডেটা বেজে ভোটার বৈধ হিসেবে শনাক্ত হলেই ভেরিফিকেশনের সঙ্গে যুক্ত প্রজেক্টের মাধ্যমে তা পোলিং এজেন্টের কাছে দৃশ্যমান হবে। মেশিনটিতে কুইক রেসপন্স কোড QR CODE সহ আরও কিছু তথ্য সংবলিত টোকেন মুদ্রণ করে ভোটারকে দেওয়া হয়। ভোটার টোকেন নিয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে এলে ভোটিং মেশিনের QR CODE স্ক্যানারের মাধ্যমে শনাক্ত করে গোপন কক্ষে থাকা তিনটি পদের জন্য ব্যালট ইউনিটে ব্যালট ইস্যু করা হবে।
ভোটার পছন্দের প্রার্থী ও প্রতীক দেখে বাম দিকে বোতামে চাপ দিয়ে সিলেক্ট করবেন এবং ওই ব্যালট ইউনিটের সবুজ রঙের CONFIRM বোতাম চেপে তার ভোট শেষ করবেন। কখনো ভুলবশত কোনো প্রতীক সিলেক্ট করা হলে, ব্যালট ইউনিটের লাল রঙের CANCEL বোতাম চেপে পরবর্তীতে যেকোনো প্রার্থীকে আবার সিলেক্ট করা যাবে।
এভাবে দুইবার CANCEL করা যাবে, তৃতীয়বার যেটি সিলেক্ট করা হবে সেটি বৈধ ভোট হিসেবে গৃহীত হবে।