বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটার প্রয়োজন রয়েছে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তাঁরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছেন। বিশিষ্টজনেরা বলেন, প্রতিবন্ধী জনগণকে সমাজের মূল ধারায় সংযুক্ত করা না গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না।
আজ রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁরা এসব কথা বলেন। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা প্রয়োজন আছে। তবে কোটা নির্ধারণ করার আগে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। কোটার সুবিধা নিতে হলে আগে শিক্ষিত হতে হবে। অথচ, দেশের মাত্র ৪ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার সুযোগ পায়। তাদের জন্য শিক্ষার সুযোগ করতে হবে। এর জন্য শুধু নীতিমালা করলে হবে না। বিনিয়োগ, শিক্ষক, অবকাঠামোর প্রয়োজন আছে।
আকবর আলি খান বলেন, প্রতিবন্ধীদের সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে হবে। সামাজিক ও মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। কোটা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান না। জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের প্রতিষ্ঠায় সরকারকে নিরন্তর উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা জরুরি বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) পাঁচটি অভীষ্টে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়ে বলা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশে যা করা হচ্ছে, তা যথেষ্ট না। ফলে এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে প্রতিবন্ধী নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের কম। বৈশ্বিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এই তরুণ প্রজন্মের সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে।
বিতর্ক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী। ‘প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে’—এই বিষয়ের ওপরে ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় সরকারি দলে ছিলেন ইডেন মহিলা কলেজ এবং বিরোধী দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সবাই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।