বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রের জামিন নাকচ
ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রের জামিন নাকচ করেছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই এই আদেশ দেন।
চার ছাত্রের মধ্যে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্র হলেন রেদোয়ান আহমেদ ও তারিকুল ইসলাম। আর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলেন মাসাদ মর্তুজা বিন আহাদ ও আজিজুল করিম।
এর আগে ৭ আগস্ট বাড্ডা ও ভাটারা থানার মামলায় গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ৯ আগস্ট আদালতে তাঁদের হাজির করে পুলিশ। সেদিন ১৮ ছাত্রের পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে তা নাকচ হয়। আর আজ ৪ জন ছাত্রের জামিন আবেদনও নাকচ করেন আদালত।
রেদোয়ান ও তারিকুলের পক্ষে তাঁর আইনজীবী কবির হোসাইন আদালতকে বলেন, এই দুই ছাত্র কোনো ভাঙচুর কিংবা পুলিশের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁদের অভিভাবক আওয়ামী লীগের সমর্থক। কোনো অপরাধে জড়িত নয়।
আর মাসাদ মর্তুজা বিন আহাদের আইনজীবী কামরুদ্দিন জামিন শুনানিতে দাবি করেন, আহাদ সম্পূর্ণ নিরপরাধ। তাঁকে ধরে নিয়ে পুলিশ নির্যাতন করেছে। এখন খুব অসুস্থ। তবে আদালত শুনানি নিয়ে চারজনের জামিন নাকচ করে দেন। গ্রেপ্তার ২২ জন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থ সাউথ, সাউথ ইস্ট ও ব্র্যাকের ছাত্র। এর মধ্যে বাড্ডা থানা-পুলিশ ১৪ ও ভাটারা থানা-পুলিশ ৮ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে।
বাড্ডা থানা-পুলিশ ১৪ ছাত্রের ব্যাপারে আদালতকে জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার ৮ ছাত্রের ব্যাপারে ভাটারা থানা-পুলিশ আদালতের কাছে দাবি করে, গ্রেপ্তার আসামিরা পুলিশের ওপর হামলা করার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।
ছাত্রদের জামিন না দিতে উভয় থানা-পুলিশই আদালতকে বলে, মামলার তদন্তের জন্য পুনরায় তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হতে পারে।
বাড্ডা থানা-পুলিশ বলছে, গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আফতাবনগর মেইন গেটের রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেন। লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল দিয়ে রাস্তার গাড়ি ভাঙচুর করেন। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন তাঁরা। তাঁরা বাড্ডা থানার ওসির গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। বাড্ডা পুলিশ ফাঁড়ি আগুন ধরাতে গেলে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভাটারা থানা-পুলিশের দাবি, সোমবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতাল ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লোহার রড, লোহার পাইপ, ইট দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন তাঁরা। বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলের আশপাশের দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসার দরজা-জানালা ভাঙচুর করেন।
বাড্ডার মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ ছাত্র হলেন রিসালাতুল ফেরদৌস, রেদোয়ান আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম, বায়েজিদ, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এএইচএম খালিদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, সীমান্ত সরকার, ইকতিদার হোসেন, জাহিদুল হক ও হাসান। আর ভাটারা থানার মামলায় গ্রেপ্তার ছাত্ররা হলেন আজিজুল করিম, মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, সাবের আহম্মেদ, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন ও আমিনুল এহসান।