আইনজীবী রথীশ হত্যা মামলার আসামির মৃত্যু
রংপুরের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক (৫৮) হত্যা মামলার এক আসামি বন্দী অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছেন। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মিলন মোহন্ত (৩০) নামের ওই আসামি। আজ শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক অজয় কুমার রায়।
গত ২৯ মার্চ রথীশ চন্দ্রকে হত্যা করে লাশ পুঁতে রাখা হয়। ৩ এপ্রিল তাঁর লাশ উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মারা যাওয়া ব্যক্তি রথীশ চন্দ্রের সহকারী হিসেবে ছিলেন। তাঁকে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন স্থানে আনা-নেওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করতেন মিলন। রথীশ চন্দ্র হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১ এপ্রিল মিলনকে রংপুর শহরের কাচারিবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তি থেকে রথীশের স্ত্রী ও প্রেমিকের কাহিনি বের হয়ে আসার কথা জানায় র্যাব। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের জন্য তাঁকে ৫ এপ্রিল আদালতে হাজির করা হয়। তবে অসুস্থ থাকায় আদালত তাঁর স্বীকারোক্তি গ্রহণ না করায় কারাগারে ফেরত নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই দিন মিলনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের প্রিজন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিলন গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান। তবে ঘটনাটি জানাজানি হয় আজ সকালে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক অজয় কুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিলনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত হবে। এর আগে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
এর আগে আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ উদ্ধারের পর ৪ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে প্রেমিক কামরুল ইসলামের সহায়তায় তাঁর স্বামীকে খুন করেন। রথীশের স্ত্রীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দুই মাস আগে তাঁরা হত্যার পরিকল্পনা করেন। ২৯ মার্চ রাতে রথীশকে ভাত ও দুধের সঙ্গে ১০টি ঘুমের বড়ি খাইয়ে অচেতন করে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে শিক্ষক কামরুল একটি ভ্যান নিয়ে আসেন। আলমারি পরিবর্তনের নাম করে সেই আলমারিতে লাশ ভরে নিয়ে তাঁদের বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে শহরের তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকায় একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে বালু খুঁড়ে পুঁতে রাখেন। ৩ এপ্রিল রাতে র্যাব ওই ভবনের ভেতর থেকে মাটি খুঁড়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে।