রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে বড় আন্দোলনের হুমকি
জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও ঐতিহ্য বিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের সুপারিশ করলেও সরকার তা মানছে না। উল্টো ইউনেসকো রামপাল প্রকল্প থেকে তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে সরকার মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং দেশের ৫৭টি পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সমাবেশে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। আজ সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে রামপাল প্রকল্প ও সুন্দরবনের পাশে অনুমোদন দেওয়া শিল্প কারখানাগুলোর অনুমোদন বাতিল ও উচ্ছেদসহ চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এসব দাবি পূরণ না করলে তারা সরকারকে সুন্দরবনবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করবে, পাশাপাশি সামনে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে একটি বক্তৃতায় বলেছিলেন ‘সুন্দরবন আমরা নিজেরা তৈরি করিনি-এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে। এই সুন্দরবন না থাকলে দেশের উপকূল, এমনকি ঢাকা শহর পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসে ধ্বংস হয়ে যেত।’ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমরা আশা করব বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবন ধ্বংস হবে এমন কিছু করবেন না।
বাপা সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন সুন্দরবন রক্ষায় চারটি দাবি তুলে ধরে বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলসহ ইউনেসকো যেসব সুপারিশ করেছে তা পালন করতে হবে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে সুন্দরবনের ক্ষতি বিষয়ে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে যে ১৩টি গবেষণা প্রতিবেদন সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়েছে, সেখানে থাকা সুপারিশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে; সুন্দরবনের পাশে অনুমোদন পাওয়া ৩২০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প বাতিল করতে হবে; যেসব কারখানা ইতিমধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে তা উচ্ছেদ করতে হবে; সুন্দরবনের ওপরে সব অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
সমাবেশে বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামিল বলেন, চীন ও ভারত পর্যায়ক্রমে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরে আসছে। তারা তাদের ফেলে দেওয়া প্রযুক্তি ও কয়লা বাংলাদেশের ওপরে চাপিয়ে দিচ্ছে। ভারতের উচ্চ আদালত থেকে দেওয়া রায়ে বলা হয়েছে কয়লার যে রাসায়নিক বিকিরণ তা পারমাণবিক শক্তির চেয়েও ক্ষতিকর। ফলে বাংলাদেশকে রক্ষায় রামপাল প্রকল্প বাতিলসহ সব কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করতে হবে।