ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মঙ্গলবারের ঘটনাকে সহিংস উল্লেখ করে উদ্বেগ জানিয়েছে সাদা দল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের দায়িত্ব কোনো ছাত্রসংগঠনের নয় বলেও মনে করে সংগঠনটি। আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্যাম্পাসে ধারাবাহিকভাবে সংঘটিত সহিংস ঘটনাবলিতে আমরা ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ। এসব ন্যক্কারজনক ঘটনায় প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি ক্রমশ এক গভীর সংকটের পথে ধাবমান এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এর দীর্ঘদিনের অর্জন ও ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় সাদা দল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঢাকার সাতটি কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির বিরুদ্ধে কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৫ জানুয়ারি থেকে ক্যাম্পাসে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। আন্দোলনের নামে কেউ যদি বাড়াবাড়ি করে, তবে তা মোকাবিলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মবিধি রয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনের দায়িত্ব কোনো ছাত্রসংগঠনের নিজের হাতে তুলে নেওয়াটা কাম্য হতে পারে না। আর এটি করতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর, বিশেষ করে ছাত্রীদের ওপর যে হামলা ও নির্যাতন করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বদৌলতে পুরো জাতি এসব হামলার ঘটনা দেখেছে। এসব হামলা ও নিপীড়নের ঘটনায় আমরা লজ্জিত এবং ক্ষুব্ধ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্দোলনের নামে অশোভন আচরণ যেমন কাম্য নয়, তেমনি আন্দোলন দমনের নামে সহিংসতাও মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক বরাবরই একটি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ। তাই ছাত্রদের যেমন শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে, তেমনি শিক্ষকদেরও মনে রাখতে হবে যে ছাত্ররা আমাদের সন্তানতুল্য। সাম্প্রতিক ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই নিজ নিজ সীমা এবং অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত ছিল। বিশেষ করে, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আরও বিচক্ষণ, ধৈর্য ও সহনশীল ভূমিকা প্রত্যাশিত ছিল। তাহলেই হয়তো এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ও লজ্জাজনক ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাসে আমরা এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। আমরা সবার কাছেই দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি। একই সঙ্গে গত কয়েক দিনে ক্যাম্পাসে সংঘটিত হামলার ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষÿতদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
ছাত্রী নিপীড়নের বিচারসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে অবরুদ্ধ করায় ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। হামলা ও মারামারির ঘটনায় প্রায় অর্ধশত আহত হন। তাঁদের মধ্যে বাম ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০ জন। আর ছাত্রলীগের ১২ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।