জনপ্রিয় ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম কমাল অপারেটরগুলো
এক মাসের মধ্যে আবারও মুঠোফোনের ইন্টারনেটের প্যাকেজের দামে পরিবর্তন আনল মোবাইল অপারেটরগুলো। এতে জনপ্রিয় ও স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের ব্যবহৃত ডেটা প্যাকেজগুলোর দাম কমেছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্যাকেজ কমানোর নির্দেশে অপারেটরগুলো গত ১৫ অক্টোবর ৩ ও ১৫ দিনের মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ বাদ দেয়। ফলে রয়ে যায় শুধু ৭ দিন, ৩০ দিন ও অনির্দিষ্ট মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ। এরপর অপারেটরগুলো সেসব প্যাকেজের দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। যেমন সেখানে একটি অপারেটরের ১ জিবি ৭ দিন মেয়াদি প্যাকেজের দাম হয় ৬৯ টাকা। দাম কমানোর জন্য বিটিআরসির সর্বশেষ নির্দেশনায় এই প্যাকেজের দাম এখন ৪৮ টাকা হয়েছে।
মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব জানিয়েছে, ১৫ অক্টোবর নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অপারেটররা তাদের ইন্টারনেট প্যাকেজে পরিবর্তন আনে। দুর্ভাগ্যবশত এর মাত্র ১৫ দিন পরে আবারও প্যাকেজে পরিবর্তন আনতে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অপারেটররা এই প্যাকেজে পরিবর্তন এনেছে।
অপারেটর সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবারেই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে সব প্যাকেজের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন আনা হয়নি। জনপ্রিয় এবং স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের ব্যবহৃত প্যাকেজগুলোতেই পরিবর্তন এসেছে। সেখানে দাম কিছুটা কমানো হয়েছে।
অপারেটরগুলো আগে থেকেই বলছিল, ৬৯ শতাংশ গ্রাহক তিন দিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ ব্যবহার করেন। এটা বন্ধ করলে ইন্টারনেটের দাম ও গ্রাহকের ব্যয় বাড়বে। বিপরীতে বিটিআরসির যুক্তি ছিল, ইন্টারনেটের অনেক প্যাকেজের কারণে গ্রাহক বিভ্রান্ত হন।
তিন দিনের প্যাকেজ বন্ধ করায় অপারেটররা অসন্তুষ্ট। তারা নানাভাবে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি।
ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ নভেম্বর বিটিআরসির কার্যালয়ে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সেখানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইন্টারনেটের দাম বাড়ুক, সেটা তিনি চান না। বিটিআরসি ও অপারেটর সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনের পর দাম বাড়ানো হলে সে ক্ষেত্রে নমনীয় মনোভাব দেখানো হবে।
বৈঠকের পর ৭ নভেম্বর অপারেটরদের চিঠি দেয় বিটিআরসি। তাতে বলা হয়, তিন দিন মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম ও পরিমাণ (ভলিউম) অপরিবর্তিত রেখে শুধু মেয়াদ বাড়িয়ে ৭ দিন করার কথা বলা হয়। অর্থাৎ মেয়াদ বাড়ানো হলেও প্যাকেজের দাম বাড়ানো যাবে না। ৩০ দিন ও অনির্দিষ্ট মেয়াদের প্যাকেজের দামও বাড়ানো যাবে না। এই নির্দেশনা ১০ নভেম্বর রাত ১২টার মধ্যে কার্যকর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।