দেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৮৭ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

দেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড, সহিংসতা, নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ৮৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন। এসব বিবৃতিতে তাঁরা গণতন্ত্র পুনর্বহাল ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চেয়েছেন।

ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়া, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি, ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ার, লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটিসহ ৮৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত হাজারো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিজ নিজ ক্যাম্পাসের বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএ) মাধ্যমে এসব বিবৃতি দিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ও পরিচালিত আনুষ্ঠানিক সংগঠনকে বিএসএ বলা হয়। বিএসএ যুক্তরাষ্ট্রের এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত ও আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্ত সংগঠন।

বিবৃতিগুলোয় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে না গিয়ে পুলিশ, বিজিবি, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের ব্যবহার করে সহিংসতার পথ বেছে নেয়। এতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, শিশু ও সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন। কয়েক হাজার মানুষ আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বেআইনিভাবে ধরপাকড়, গণগ্রেপ্তার ও অপহরণের শিকার হয়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে দেশজুড়ে ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে বহির্বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশিরা তাঁদের দেশে অবস্থানরত আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা থেকেও বঞ্চিত হন। এ ছাড়া দেশজুড়ে কারফিউ জারি, সেনাবাহিনী মোতায়েন ও রাস্তায় কাউকে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয় সরকার, এমনটাই বলা হয়েছে বিবৃতিগুলোয়।

বর্তমান ‘স্বৈরাচারী’ সরকার বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার মতো মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে উল্লেখ করে বিবৃতিগুলোয় আরও বলা হয়, দেশের বর্তমান বিচারব্যবস্থা সরকারের প্রভাবমুক্ত নয়। তাই বর্তমান সরকারের অধীনে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঠিক বিচার সম্ভব নয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৮৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে পুনর্বহাল করার জন্য দেশে-বিদেশে সব বাংলাদেশি নাগরিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানান।