মুখোশ পরে এসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে মারধর

অপহরণের পর নূরুল করিমকে মারধর করে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। ৮ নভেম্বর, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার শিক্ষার্থীর নাম নূরুল করিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শহীদ আব্দুর রব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

নূরুল করিমের সহপাঠীদের সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে রাত ১০টার দিকে নূরুল ও তাঁর দুই সহপাঠী শহীদ আব্দুর রব হলের দিকে যাচ্ছিলেন।

পরিবহন দপ্তরের সামনে এলে মুখোশ পরা পাঁচজন ব্যক্তি গতিরোধ করে তাঁকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। পরে অন্য দুই সহপাঠী প্রক্টরিয়াল বডিকে বিষয়টি জানালে তাঁরা নূরুলকে আহত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদ–সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করেন। পরিবহন দপ্তর থেকে ওই এলাকার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার।

জানতে চাইলে নূরুলের বরাত দিয়ে তাঁর সহপাঠী জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘তাঁকে (নূরুল করিম) জীববিজ্ঞান অনুষদের পাশে নিয়ে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। এতে পা ও পিঠে জখম হয়েছে। মারধরকারী মুখোশধারী পাঁচজন ছিলেন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে জীববিজ্ঞান অনুষদের পাশে তাঁকে ফেলে রেখে  চলে যায়।’

মারধরে আহত নূরুল করিমকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোন্দকার মোহাম্মদ আতাউল গণি প্রথম আলোকে বলেন, নূরুলের ডান হাঁটুর নিচে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাড় ভেঙে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় তাঁরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

এদিকে নূরুলকে মারধরের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।  

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত এক মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পাঁচটি চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু প্রক্টরিয়াল বডি কাউকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার ও প্রক্টরিয়াল বডি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফটক খুলে দেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল বডি নূরুলকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

আগের ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘ক্যাম্পাসের অধিকাংশ সিসিটিভি ফ্যাসিস্ট নেতৃত্বের সময় নষ্ট করে ফেলা হয়েছিল। তাই ঘটনার কোনো কূলকিনারা করতে পারা যায়নি। এখন ধীরে ধীরে সিসিটিভি ক্যামেরা সচল করা হয়েছে।’