চবি ছাত্রলীগের অবরোধে আরও এক উপপক্ষের সংহতি
বিবাহিত ও চাকরিজীবীদের বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি পুনর্গঠন বর্ধিত করার দাবিতে শাখা ছাত্রলীগের অবরোধে আরও একটি উপপক্ষ সংহতি জানিয়ে যোগ দিয়েছে। বিজয় নামের ছাত্রলীগের একটি উপপক্ষ সোমবার দুপুরে যোগ দেয়।
চবি শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীদের ডাকা এই অবরোধ সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় শুরু হয়। অবরোধ ডাকা ছাত্রলীগের উপপক্ষগুলো হলো ভার্সিটি এক্সপ্রেস, বাংলার মুখ, উল্কা, কনকর্ড, এপিটাফ ও রেড সিগন্যাল। এ উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা সবাই চট্টগ্রাম সাবেক সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
তাঁদের অবরোধের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যোগ দেওয়া বিজয় উপপক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এ উপপক্ষ গত ১ ও ২ আগস্ট একই দাবিতে ক্যাম্পাস অবরোধ করেছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, ভোর সাড়ে পাঁচটায় পরিবহন দপ্তরের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শাখা ছাত্রলীগের ছয়টি উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা। এরপর সকাল সাড়ে সাতটায় গোলচত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেন তাঁরা। ছাত্রলীগের অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা শাটল ট্রেনও আটকে দেন। এতে ক্যাম্পাসে অচলাবস্থা বিরাজ করে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ১৬টি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির অনুরোধে দুপুর সাড়ে ১২টায় মূল ফটক খুলে দেন বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা। তবে অবরোধ শিথিল কিংবা প্রত্যাহার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ও শাটল ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক হয়নি।
ফটক খুলে দেওয়ার বিষয়ে রেড সিগন্যাল উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে কোনো ক্লাস আর পরীক্ষা চলবে না। যেহেতু ক্লাস পরীক্ষা ১২টার মধ্যেই হয়, তাঁর ১২টার পর ফটক খোলা হয়েছে। আর শাটল ট্রেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বাস চলাচল না করলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে, তাই এগুলো আপাতত চলতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সেবার প্রয়োজনে মূল ফটক খোলা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদেরকে মূল ফটক খুলে দেওয়ার জন্য বুঝিয়েছি। তাঁরা এ কথা শুনেছেন। এখন অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনটির কেন্দ্রীয় দপ্তর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। কমিটি ঘোষণার পরই পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৪টি হলের প্রায় ৩০টি কক্ষ ভাঙচুর করেন। এদিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দিয়ে অবরোধের ডাক দেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা নতুন শাখা কমিটি গঠনের দাবি জানান। এ অচলাবস্থা অব্যাহত থাকে ২ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি বিভাগের ১১টি চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।