এক ক্যাথল্যাবে চলছে চমেক হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগ
একমাত্র ক্যাথল্যবের ওপর ভর করে চলছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগ। দুই শতাধিক রোগীর ওয়ার্ডটিতে প্রতিদিন প্রায় ৩০ রোগীর এনজিওগ্রাম, পেসমেকার বসানো ও পিসিআই বা স্ট্যান্টিং (হার্টে রিং পরানো) করার প্রয়োজন পড়ে; কিন্তু গড়ে ১০ রোগীর বেশি এই ক্যাথল্যাবে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
ফলে মাসখানেক ধরে ক্যাথল্যাবের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে রোগীদের। যেকোনো সময় একমাত্র ক্যাথল্যাবটি অচল হয়ে গেলে সরকারি পর্যায়ের এই সেবা থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ। এর আগে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে একবার প্রায় ২০ দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল এই ক্যাথল্যাব। পরে মেরামত করে এখন এটি চালু করা হয়। এ জন্য বিকল্প আরেকটি ক্যাথল্যাব দরকার বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
হৃদ্রোগ বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আশীষ দে প্রথম আলোকে বলেন, দুটি ক্যাথল্যাব ছিল। একটি অচল হয়ে গেছে কয়েক বছর আগে। বর্তমানে যেটি চালু রয়েছে, সেটিও মাঝেমধ্যে সমস্যা করে। জানুয়ারিতে একবার বিকল হওয়ার পর আবার মেরামত করা হয়। এখন চলছে। তবে একটি দিয়ে সেবা দিতে গিয়ে অপেক্ষমাণের তালিকা বড় হচ্ছে।
প্রায় আড়াই বছর আগে চমেক হৃদ্রোগ বিভাগের একটি ক্যাথল্যাব অচল হয়ে পড়ে। সেটি আর মেরামত করার অবস্থায় নেই বলে জানা গেছে। দুই বছর ধরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরেকটি ক্যাথল্যাবের জন্য আবেদন জানিয়ে আসছিল। এসব আবেদনে অবশিষ্ট ক্যাথল্যাবটি অচল হওয়ার ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। ৪ জানুয়ারি অবশিষ্ট ক্যাথল্যাবটি অচল হয়ে যায়। পরে মেরামত করে চলছে সেবাদান।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, হৃদ্যন্ত্রের মাংসপেশি, ভালভ (কপাটিকা), ধমনির পরিস্থিতি জানতে এবং হৃদ্যন্ত্রে রক্তের চাপ বুঝতে রোগীকে ক্যাথল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়। ত্রুটি ধরা পড়লে প্রয়োজনমতো রক্তনালিতে স্ট্যান্ট (রিং) পরানো, পেসমেকার বসানো, সংকুচিত ভালভ ফোলানো হয়। এখন দিনে আটটির মতো এনজিওগ্রাম করা হয়। এ ছাড়া দুটির মতো পেসমেকার বসানো হয়। মাঝেমধ্যে দু–একজনকে স্ট্যান্ট পরানো হয়; কিন্তু সবাইকে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অনেকে বাইরে চলে যাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে হৃদ্রোগ বিভাগে ভর্তি ছিলেন সুজন চৌধুরী নামের মিরসরাইয়ের এক যুবক। চিকিৎসকেরা তাঁকে এনজিওগ্রাম করার পরামর্শ দেন; কিন্তু হাসপাতালে বিলম্ব হওয়ায় তিনি বাইরে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে এনজিওগ্রাম করেন। চমেক হাসপাতালে করলে খরচ হতো পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা।
বিষয়টি স্বীকার করে বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক আশীষ দে বলেন, বিকল্প একটি ক্যাথল্যাবের বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। পরিচালকের মারফত তা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নতুন ক্যাথল্যাব এলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।