দলবাজি, অপসাংবাদিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা ও তথ্যসন্ত্রাস সাংবাদিকদের মর্যাদা ম্লান করে দিচ্ছে। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার প্রশ্নে কোনো আপস করা চলবে না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে দখল করে নিয়েছে স্বার্থনির্ভর সাংবাদিকতা।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সাংবাদিক মহাসম্মেলনে সাংবাদিক নেতারা এ কথাগুলো বলেন। জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা আয়োজিত এই সম্মেলনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতারা বক্তব্য দেন।
সম্মেলনে বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বস্তুনিষ্ঠ, সৎ, নির্ভীক সাংবাদিকতা দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে আনে। একটি আদর্শ গণমাধ্যমের কোনো দল, গোষ্ঠী, সরকার, বিদেশি রাষ্ট্র বা কোনো এজেন্সির কাছে দায়বদ্ধতা থাকে না। দায়বদ্ধতা থাকে শুধু দেশের জনগণের কাছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, গণমাধ্যমের পরাজয় মানে জনগণের পরাজয়, জনগণের পরাজয় মানে রাষ্ট্রের পরাজয়।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম নানা সংকটে আবর্তিত। এই সংকট তৈরি করেছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার। গণমাধ্যমকে সব সময় জনগণের পক্ষে থাকার কথা ছিল। কিন্তু জনগণের সঙ্গে গণমাধ্যমের একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে গুম–খুনের কথা জিজ্ঞেস না করে তৈলমর্দন করতেন অনেক দালাল সাংবাদিক। সেটা প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা সভায় পরিণত হতো। এভাবে শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার থেকে মহাস্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট থেকে মহাফ্যাসিস্ট বানানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে দালাল সাংবাদিকেরা। এ সত্য আমাদের স্বীকার করতে হবে।’
ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যার ১২ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু বিচার হয়নি। তিনি বর্তমান সরকারকে অবিলম্বে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যেমন সাংবাদিক সুরক্ষা আইন চাই, ঠিক একইভাবে আর কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে গিয়ে যেন কোনো সাংবাদিক আহত না হন, সেটাও চাই।’
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি মমিনুর রশিদ শাইন মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার মহাসচিব কামরুল ইসলাম।