ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কারাগারে মাসখানেকের মধ্যে অন্তত দুবার হামলার শিকার হয়েছেন পি কে হালদার। আজ মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে এ কথা জানান তাঁর আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার সময় তিনি ভারতে পালান। গত বছরের মে মাসে পাঁচ সহযোগীসহ পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন তিনি। কারাগারে হাফিজুল মোল্লা নামের এক ব্যক্তি পি কে হালদারের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে।
পি কে হালদার ও তাঁর পাঁচ সহযোগীর জেল হেফাজত শেষে আজ আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে আদালত আগামী ৭ জুন আসামিদের হাজিরার তারিখ ধার্য করেন।
পি কে হালদারকে মারধরের বিষয়টি গতকাল কলকাতায় সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) তিন নম্বর আদালতে তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না। তিনি আদালতকে বলেন, পি কে হালদার বর্তমানে আলিপুরে প্রেসিডেন্সি কারাগারে বন্দী। সেখানেই প্রথমবার চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল কারাকক্ষে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। পরে কারাগারের অন্য কক্ষে তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানেও ২২ এপ্রিল কক্ষের বাইরে পত্রিকা পড়ার সময় আচমকা তাঁর ওপর হামলা হয়েছে। আইনজীবী বলেন, দুই হামলাতেই আহত হন তিনি। তবে আঘাত গুরুতর ছিল না, তবে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, হামলাকারী অভিযুক্ত ব্যক্তি হাফিজুল মোল্লা বসিরহাটের বাসিন্দা। গত বছরের জুলাই মাসের গোড়ার দিকে এই হাফিজুলের বিরুদ্ধে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকার অভিযোগ ওঠে। রাতভর মমতার বাড়িতে লুকিয়ে থাকার পর নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন।
তবে কারাগারের ভেতর পি কে হালদারের ওপর হামলার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, কারাগার কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে, তারাই হামলার কারণ বলতে পারবে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, কারাগারের ভেতরে পি কে হালদারের ওপর হামলা হয়েছে, তাঁকে মারধর করা হয়। ওই ঘটনায় তিনি আহত হন। পরে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পি কে হালদারকে কারাগারের অন্য একটি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।
আইনজীবী অরিজিৎ আরও জানান, আজ আদালত জানতে চান, কারাগারের নতুন যে ওয়ার্ডে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়েছে, সেখানে তিনি সন্তুষ্ট কি না। জবাবে পি কে হালদার জানিয়েছেন, তিনি সন্তুষ্ট।
পি কে হালদারসহ পাঁচ আসামি প্রেসিডেন্সি কারাগারে আছেন, অন্যদিকে একমাত্র নারী আসামি আছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।
ইডি গত বছরের মে মাসে পি কে হালদার ও তাঁর পাঁচ সহযোগীকে উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করে।