বঙ্গভবনের বিলাসিতা ছেড়ে নিজের রাস্তা দেখেন: রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহফাইল ছবি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের উদ্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এখনো সময় আছে, বঙ্গভবনের বিলাসিতা ছেড়ে আপনি আপনার নিজের রাস্তা দেখে নিন। ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার সংবিধান আমরা মানি না; কিন্তু ওই সংবিধানের আপনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। যদি আপনি মনে করে থাকেন, ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনাকে আপনি পুনর্বাসিত করবেন, তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার পুনর্বাসন এই বাংলায় আর কোনোদিন হবে না। তবে এই খুনি শেখ হাসিনাকে বাংলায় আসতে হবে, তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে, ফাঁসির কাষ্ঠে তাকে ঝুলতে হবে।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে মশালমিছিল শেষে এই সমাবেশ হয়।

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সোমবার সন্ধ্যার পর মশালমিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
ছবি: প্রথম আলো

সমাবেশে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে হাসনাত প্রশ্ন রাখেন, ‘যদি ছাত্রদের আজকে আড়াই মাস পরে রাজু ভাস্কর্যে এসে দাঁড়াতে হয় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও গ্রেপ্তার করানোর জন্য তাহলে আপনাদের কাজটা কী?’ তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি পদে পদে আজ ছাত্রলীগ দ্বারা শিক্ষার্থীরা নিগ্রহ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আসিফ স্যার, আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতা–কর্মীকে আপনি গ্রেপ্তারের আওতায় নিয়ে আসতে না পারেন, তাহলে আপনি শহীদ ও আহতদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। ’২৪–পরবর্তী বাংলাদেশে ছাত্রলীগ প্রাসঙ্গিক কি না, সেটার ফয়সালা ১৫ জুলাই হয়ে গেছে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কবরস্থ হয়ে গেছে ৫ আগস্ট। তারা সীমান্তের ওপারে ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনর্বাসন বাংলাদেশে আর হবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করতে হবে। দ্রুততম সময়ে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করে থাকেন, আপনাদের পোস্ট অপরিহার্য, তাহলে ভুল ভাবছেন। শেখ হাসিনাও নিজেকে অপরিহার্য মনে করেছিল। বাংলার ছাত্র–নাগরিক তার বিকল্প খুঁজে নিয়েছে। পুলিশ–প্রশাসন যেভাবে অসহযোগিতামূলক আচরণ করছে, আপনারা যদি মনে করে থাকেন ছাত্রলীগ, ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার সঙ্গে সঙ্গে আঁতাত করবেন এবং আপনাদের ভূমিকা অপরিহার্য, তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। অবিলম্বে আপনাদের বিকল্প খুঁজতেও আমরা দ্বিধা করব না। প্রয়োজনে আমরা ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফোর্স গঠন করব। এখনো সময় আছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশাসনিক সহায়তা দিতে হবে।’

এ সময় কিছু গণমাধ্যমেরও সমালোচনা করেন হাসনাত। তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে যেসব কলম শেখ হাসিনার পক্ষে লিখেছে, সেই কলমগুলো আবার চালু হয়েছে। যেসব মেরুদণ্ড শেখ হাসিনার কাছে দাসখতের বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে, সেসব মেরুদণ্ড আবার সোজা হওয়ার চেষ্টা করছে। যেসব মিডিয়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে শক্তিশালী করেছে, সেসব মিডিয়াও আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ৫ আগস্ট ওই ধরনের মিডিয়া কবরস্থ হয়ে গেছে। তাদের পুনর্বাসন বাংলাদেশে কখনো সম্ভব নয়।’