জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

হামলায় আহত একজনকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।ছবি: আশিকুজ্জামান

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ হামলা চালান। এতে অন্তত চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পূর্বঘোষণা অনুসারে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। তবে বেলা তিনটা থেকেই এই এলাকার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাহাদুরশাহ পার্কের সামনে অবস্থান নেন। বেলা তিনটার পর থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে সমবেত হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন।  

শিক্ষার্থীরা জানান, বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রদের ধাওয়া করেন। ছাত্ররা দলবদ্ধ হয়ে তাঁদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। তাঁদের হাতেও ক্রিকেট স্টাম্প ও গাছের ডাল দেখতে পাওয়া যায়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যায়ের ভেতরে প্রবেশ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাঁরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ শীর্ষক ব্যানার নিয়ে কলা ভবনের সামনে সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে ছাত্ররা ফিরে যাওয়ার সময় রায়সাহেব বাজার সড়কে তাঁদের ওপর হামলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রায়সাহেব বাজার সড়ক হয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সামনে পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেকেই আদালতের চত্বরে চলে আসেন। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছেন।

আহত কয়েকজন ছাত্রকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অন্তত তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ চারজন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় সিএমএম আদালতের সামনে একটি প্রাইভেট কারও ভাঙচুর করা হয়েছে। রায়সাহেব বাজারের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

রায়সাহেব বাজার ছাড়াও বাহাদুরশাহ পার্ক এলাকায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব এলাকায় পুলিশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।