রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার পথ আছে কি না, জানতে চেয়েছেন কংগ্রেস সদস্যরা
মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মতবিরোধ দূর করতে সমঝোতার পথ আছে কি না, সেটাও জানতে চেয়েছেন তাঁরা।
আজ রোববার দুপুরে মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্যের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সফরের দ্বিতীয় দিনে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য এড কেইস ও রিপাবলিকান পার্টির সদস্য রিচার্ড ম্যাকরমিক সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এরপর দুপুরে তাঁরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সেখানে তাঁদের সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তাঁরা।
মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা নির্বাচন নিয়ে জানতে চেয়েছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা (কংগ্রেস সদস্য) বলেছে, তোমাদের কোনো সমঝোতার পথ আছে কি না ওদের (বিএনপি) সঙ্গে। আমরা বলেছি, তাদের যে দাবি, সরকারের পদত্যাগ, ওটাতে সমঝোতার কোনো সুযোগ (স্কোপ) নেই।’
মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের কাছে সে দেশে নির্বাচনের আগে সরকার পদত্যাগ করে কি না, সেটা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এমন দাবি (সরকারের পতন) থাকলে তোমরা কি আলোচনায় বসবে? ওগুলোর প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব।’
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতা থাকলে সুষ্ঠু ও সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, সব দল যদি নির্বাচনে যোগ দেয়, তারা যদি আন্তরিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, তাহলে নির্বাচন সহিংসতা ছাড়া হবে। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন হবে।
মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে কোনো বার্তা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁদের একজন বললেন, আমরা সব সময় ঐকমত্যে যাই। আমরা বলেছি, সমঝোতা করার মতো দাবিদাওয়া তো এখানে নেই। আমরা চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তারা তো (বিএনপি) তো নির্বাচনের খবরই রাখে না। তারা চায় সরকারের পতন। সরকার পতনের ইস্যু সংলাপে যাওয়ার মতো কোনো বিষয় (টপিক) নয়।’
যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন নিয়ে কোনো ফর্মুলা দিচ্ছে কি না বা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে—এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বস্ত কি না জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘না। সেটা তাদের জিজ্ঞাসা করুন।’
ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রসঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, চীনের প্রসঙ্গ এসেছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের কাছে বিভিন্ন লোকজন বলেছে, বাংলাদেশ একটা ভয়ংকর জায়গা। এরা চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। চীনের গোলাম হয়ে গেছে।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘চীন নিয়ে ওরা বলেছে, তোমরা চীনের ভেতরে চলে যাচ্ছ। আমরা বলেছি, চীনের ঋণের ফাঁদে যাচ্ছি না। আমরা চীন থেকে ঋণ নিয়েছি, সেটা ১ শতাংশের মতো। এটা কোনো বড় ইস্যু না। বলেছি, মনস্তাত্ত্বিকভাবে আমরা অবাধ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই অবাধ, ন্যায্য, অংশগ্রহণমূলক ও নিরাপদ ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল।’