কবি হেলাল হাফিজকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়ার ইঙ্গিত সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টার

আজ শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সদ্য প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজকে শ্রদ্ধা জানানো হয়ছবি: দীপু মালাকার

‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’—অমর এই পঙ্‌ক্তির রচয়িতা কবি হেলাল হাফিজকে মরণোত্তর একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কারের মতো রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়া যায় কি না, সে জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা যা করার আছে, তা করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা দ্রুত কিছু শুনবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আজ শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সদ্য প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজমসহ অন্যরা। জানাজা শেষে প্রয়াত হেলাল হাফিজের প্রতি বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

গতকাল শুক্রবার কবি মারা গেছেন। আজ বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে জানাজা শেষে পরে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁকে চিরনিদ্রায় শায়িত করার কথা রয়েছে।

বাংলা একাডেমিতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, কবি হেলাল হাফিজের খুব বেশি বই বের হয়নি। কিন্তু তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে। এটি তাঁর অর্জন। কিন্তু এর বাইরেও তিনি অনেক কবিতা লিখেছেন, একাকিত্বের কবিতা লিখেছেন, প্রেমের কবিতা লিখেছেন। বাংলাদেশের সংস্কৃতিজগৎ তাঁর শূন্যতা বোধ করবে। এক বইতেই তিনি সংস্কৃতিতে তাঁর অবস্থান চিরস্থায়ী করে গেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, হেলাল হাফিজ তাঁর কবিতাতেই বেঁচে থাকবেন। কবি বেঁচে থাকেন তাঁর কবিতায়। তাঁর কবিতাই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখবে। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কী কী দায়িত্ব আছে, কবি হেলাল হাফিজকে নিয়ে কী কী করা যায়, কী করণীয় আছে, তা নিয়ে কাজ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা দ্রুত কিছু শুনবেন।’

আজ শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সদ্য প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
ছবি: দীপু মালাকার

সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘কবি হেলালের অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি থাকলে বাংলা একাডেমি বের করবে। আরেকটি জিনিস, যদিও আমি মনে করি, কবি কখনো কোনো পদক বা পুরস্কারের জন্য কিছু লিখেন না। কিন্তু পুরস্কার দিতে হয় তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। হেলাল হাফিজকে তো আমরা একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কার কখনোই দিইনি। উনি এটি পাওয়ার জন্য লেখেননি। কিন্তু এটি দেওয়াটা জাতির দায়িত্ব ছিল। কিন্তু উনাকে দেওয়া হয়নি। এর ফলে এ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে আমাদের সংষ্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কী করার আছে, আমরা সেটা দেখব।’

হেলাল হাফিজকে মরণোত্তর পদক দেওয়ার বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘...সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে যা যা করার আছে, আমরা নিশ্চিতভাবে সেটা করব। আপনারা কিছুদিনের মধ্যে হয়তো জানবেন।’

মরণোত্তর পদকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের প্রসঙ্গ টেনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনি যেমন বললেন, মরণোত্তর পদক দেওয়ার ব্যাপার আছে। এখনই কিছু ঘোষণা করার মতো ঘোষণা করতে চাই না। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের কাজের মধ্যে দিয়ে সেটা জানবেন।’