ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে সোচ্চার বাংলাদেশ

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ‘মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত, গাজায় চলমান গণহত্যা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনেরাছবি: প্রথম আলো

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ও মুক্তিযুদ্ধ ৭১ নামের দুটি সংগঠনের বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, ফিলিস্তিনে নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলিরা গণহত্যা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের কারণে তা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পশ্চিমাদের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে বাংলাদেশ গণহত্যা বন্ধে সোচ্চার রয়েছে।

‘মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত, গাজায় চলমান গণহত্যা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনেরা এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দুটি সংগঠন।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী বলেন, একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দল ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলছে না। এ আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘আমরা একটা অন্যায্য, অমানবিক বিশ্বে বাস করছি। যেখানে একটি অঞ্চলে নির্বিচার গণহত্যা হচ্ছে। শিশু হত্যা হয়, নারী হত্যা হয়। তারপরও সারা বিশ্ব নির্বিকার থাকে। এ বিশ্বে যারা সবচেয়ে শক্তিধর দেশ, তারা অস্ত্র পাঠায় এবং জাতিসংঘে যেন যুদ্ধবিরতি না হয়, সে জন্য ভেটো দেয়।’

ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘ফিলিস্তিনে যে গণহত্যা হচ্ছে তা আন্তর্জাতিকভাবে মোটামুটি সবাই স্বীকার করে। কিন্তু সেই উচ্চারণ শুনতে পাই না। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে গিয়ে এ কথা জোরেশোরে উচ্চারণ করছেন। এতে তিনি বাংলাদেশকে গর্বিত করেছেন, আমাদের গর্বিত করেছেন যে বাংলাদেশ ভয় পায় না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা বিশ্বব্যাপী এ বিষয়ে সোচ্চার রয়েছেন এবং অন্যদের সোচ্চার করার জন্য চেষ্টা করছেন।’ এখন পশ্চিমারা মানবাধিকারের সবচেয়ে বড় শত্রু বলে উল্লেখ করেন  মুন্সি ফয়েজ আহমেদ।

ইসরায়েলিদের চালানো গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মোহাম্মদ সামাদ বলেন, ফিলিস্তিনে ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে মিছিল হচ্ছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কানে তুলছে না।

মধ্যপ্রাচ্য এক হতে পারছে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনিদের নির্বিচার হত্যা করা হচ্ছে, তাঁদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। বেশির ভাগ নারী ও শিশু। এটা সবচেয়ে বড় মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব। তিনি বলেন, যত দ্রুত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নির্মিত হবে, তত দ্রুত মনুষ্যত্ব রক্ষিত হবে এবং তত দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে।

এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি নূরুল আলম। এ ফোরামের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত কামালউদ্দিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মাবুদ প্রমুখ।