কাদের ইশারায় ও যোগসাজশে সাইফুলকে তুলে নেওয়া হয়েছে, জানতে চায় ‘মায়ের ডাক’

গুমের শিকার বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলামের ভাই সাইফুল ইসলামকে (শ্যামল) তুলে নেওয়ার ঘটনার বিচার দাবি করে ‘মায়ের ডাক’-এর সংবাদ সম্মেলন। আজ সোমবার ডিআরইউ কার্যালয়েছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া কাদের ইশারায় ও যোগসাজশে গুমের শিকার বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলামের ভাই সাইফুল ইসলামকে (শ্যামল) তুলে নেওয়ার হয়েছে, তা উদ্‌ঘাটন করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশবাসীকে জানানোর দাবি জানিয়েছে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম। তাঁর ভাই সাইফুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যাঁরা এই জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার কাজে জড়িত, তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। পেছনের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। যদি তিন দিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে মায়ের ডাক রাজপথে কর্মসূচি দেবে।

মায়ের ডাক মনে করে, এ ঘটনা বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী ও মায়ের ডাককে মুখোমুখি করার অপচেষ্টা করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে জানানো হয়, কয়েকজন সেনাসদস্য গতকাল সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগ এলাকার বাসা থেকে সাইফুল ইসলামকে তুলে নেন। এ বাসা মায়ের ডাকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবেও ব্যবহার হয়ে আসছে। পরে গতকাল বিকেল পাঁচটার সাইফুলকে আবার বাসার সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়।

পরে গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাইফুলের বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছিল।

‘মায়ের ডাক’-এর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিক, অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন অঙ্গনের সদস্যরা। আজ সোমবার ডিআরইউ কার্যালয়ে
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

আজকের সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআরের এই বিবৃতি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মায়ের ডাক। তাদের দাবি, ‘সত্যকে আড়াল করতেই’ আইএসপিআরের বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

সাইফুল ইসলামকে তুলে নেওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব মো. আখতার হোসেন। এ ঘটনা আওয়ামী ফ্যাসিবাদকে স্মরণ করিয়ে দেয় উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন বলেন, এ ঘটনার ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে।

সেনাসদস্যরা কীভাবে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটাতে পারে, সেই প্রশ্ন তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গুমের রাজনীতি বন্ধ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, মানবাধিকারকর্মী জাহিদ আহসান, মায়ের ডাকের সংগঠক আফরোজা ইসলাম, গুমের শিকার মো. সোহেলের মেয়ে সাফা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মায়ের ডাকের সদস্য মো. মঞ্জুর হোসেন।