সৌদি ইমিগ্রেশন ঢাকায়, হজযাত্রীদের স্বস্তি
যাত্রা শুরুর ছয় থেকে আট ঘণ্টা আগে রাজধানীর উত্তরার আশকোনা হজ ক্যাম্পে আসেন হজযাত্রীরা। সেখানে ইমিগ্রেশন শেষে হজযাত্রীদের নিয়ে আসা হয় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এরপর বিমানবন্দরের ভেতরে থাকা সৌদি ইমিগ্রেশনে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। আগে সৌদি বিমানবন্দরে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশনের জন্য হজযাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। সেটা এখন শাহজালাল বিমানবন্দরে করা হচ্ছে। এতে ভোগান্তি কমায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন হজযাত্রীরা।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়। আজ বুধবার পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ তিনটি এয়ারলাইনসের ৫১টি ফ্লাইটে মোট ২০ হাজার ২৯১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। এ বছর হজ করতে ৮৫ হাজার ২৫৭ জনের সৌদি আরবে যাওয়ার কথা রয়েছে।
হজযাত্রীরা বলছেন, বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন হজ ক্যাম্পেই করা হচ্ছে। হজ ক্যাম্প থেকে হজযাত্রীদের সঙ্গে নেওয়া লাগেজ আলাদা গাড়িতে করে উড়োজাহাজে নেওয়া হচ্ছে। সৌদি বিমানবন্দরে নামার পর আলাদা গাড়ি করে হজযাত্রীদের লাগেজ হোটেলে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা আরও বলেন, আগে সৌদি বিমানবন্দরে যাওয়ার পর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করতে হজযাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। সেটা এখন শাহজালাল বিমানবন্দরে হচ্ছে।
নওগাঁর ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী পরিবার নিয়ে হজ করতে যাচ্ছেন। আজ উত্তরার আশকোনার হজ ক্যাম্পে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ২০১১ সালে একবার হজ করেছি। এবার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হজ করতে যাচ্ছি। সৌদি বিমানবন্দরে নামার পর যে ইমিগ্রেশন হতো, এখন সেটা দেশে হচ্ছে। সুন্দর ব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তি নেই।’
হজযাত্রীদের ব্যবস্থাপনায় উন্নতি দেখছেন একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে হজ ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করা মো. রাসেল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় অনেকগুলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কোনো এজেন্সি প্রতারণা করলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে ভোগান্তি অনেক কমেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিমানবন্দরের ভেতরের ১০ ও ১১ নম্বর ফটকে আলাদা করে বোর্ডিং ব্রিজ বসিয়েছে সৌদি দূতাবাস। সেখানে ১৫টি বুথ বসিয়ে হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। সেখানে হজযাত্রীদের জন্য রয়েছে দুটি লাউঞ্জ ও নামাজের স্থান।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, হজযাত্রা সহজ করতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। হজযাত্রা পরিচালনায় ১২৬ জন কর্মীকে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের চেক–ইন, লাগেজ বুকিং ও ইমিগ্রেশনের জন্য হজ ক্যাম্পে তিনটি স্ক্রিনিং মেশিন, ১৭টি চেক ইন কাউন্টার রাখা হয়েছে। হজ ক্যাম্প থেকে বিমানবন্দরে আনার জন্য রাখা হয়েছে ১২টি বাস।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হজযাত্রীরা যেন হাসিখুশি মুখে হজে যেতে পারেন, সে জন্য তাঁরা সব ধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিমানবন্দরে সরকারের ২৪টি সংস্থা কাজ করছে। তাদের সঙ্গে নিয়ে অনেকগুলো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।