আজিজের দুই ভাইয়ের এনআইডি জালিয়াতিতে ইসির কেউ জড়িত কি না, দেখা হবে: সিইসি

নির্বাচন কমিশনের খবর সংগ্রহে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বক্তব্য দেনছবি: সংগৃহীত

মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত কি না, তা যাচাই করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সিইসি বলেন, ‘কেউ যদি ব্রাইব (ঘুষ) নিয়ে থাকেন, সেটাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। দুটো কমিটি করা হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনের খবর সংগ্রহে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘আরএফইডি টক’-এ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই আয়োজন করা হয়।

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ নিজের ও বাবা-মায়ের নাম বদলে এনআইডি করেন। তোফায়েল নিয়েছেন দুটি এনআইডি। একটি তানভীর আহমেদ তানজীল নামে, আরেকটি আসল নামে। হারিছ আহমেদ এনআইডি নেন মোহাম্মদ হাসান নামে।

সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেখছি, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ ও তাঁর ভাইয়েরা এনআইডি সংশোধন করেছেন। সাধারণ মানুষের কাছে হাজারটা কাগজ চাওয়া হয়। তাহলে তাঁদেরটা কীভাবে সংশোধন হলো?’

জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘হতে পারে, অবশ্যই হতে পারে। যেমন খুন করা অপরাধ। অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও খুন হচ্ছে। যিনি এই কাজটা করছেন তিনি অপরাধ করছেন। কোনো না কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে এই অপরাধ করার সুযোগটা সে (আজিজ) পেয়েছে। কিন্তু তিনি যে নির্মোহ ব্যক্তিত্ব, আমরা তো সেটা বলছি না। কোনো সাফাই করি না। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হয়েছে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এনআইডি একটি জটিল প্রযুক্তিগত দিক। এই প্রযুক্তির কোনো ফাঁকফোকর থাকতে পারে।

তখন সাংবাদিকেরা বলেন, প্রযুক্তির ফাঁকফোকরে হয়েছে, নাকি মানুষের অসাধুতার মাধ্যমে হয়েছে?

জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘হতে পারে। কেউ যদি ব্রাইব (ঘুষ) নিয়ে থাকেন, সেটাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। দুটো কমিটি করা হয়েছে। অতীতেও কিছু লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদি তথ্য দিতে পারেন, নির্বাচন কমিশন যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তখন অবশ্যই আমাদের জবাবদিহি করা যাবে।’

সিইসি বলেন, ‘এখনো কত (এনআইডি) বেআইনিভাবে আছে সেটা তো আমরা জানি না। যেটা আমাদের জানানো হবে, যেমন আজিজ সাহেবের বিষয়টা আমরা জেনেছি। হারিছ চৌধুরীও বোধ হয় করেছিলেন। একটা সিস্টেমে যদি ৯৯ ভাগ লোক সুবিধা পেয়ে থাকে, ১ শতাংশ লোক এর অপব্যবহার করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আমরা সিস্টেমটাকে বর্জন করতে পারব না।’

ভবিষ্যতে যেন এমন না হতে পারে, এ রকম কোনো সিস্টেম করবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘এটা আমেরিকাও পারছে না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিম। আরএফইডির সভাপতি একরামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবীর। এ সময় নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথসহ কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।