গঙ্গা চুক্তি নিয়ে মমতার অভিযোগ খারিজ করল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ভারতেরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন। নয়াদিল্লি, ভারত, ২৮ জুনছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গা চুক্তি নবায়নের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সারবত্তাহীন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে গঙ্গা চুক্তির নবায়ন প্রসঙ্গটি আলোচিত হয়। ৩০ বছরের ওই চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হচ্ছে। চুক্তি নবায়ন বিবেচনার জন্য দুই দেশের মধ্যে কারিগরি একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের বৈঠকের পর এ-সংক্রান্ত ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, এই বিষয়ে তাঁর (মমতা) সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তাঁকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। মমতা কলকাতায় বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর শর্ত মানা হচ্ছে না। একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। অথচ, নদী ও নদীর পানি রাজ্য সরকারের এখতিয়ারে পড়ে। এ বিষয়ে তিনি (মমতা) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন বলেও জানিয়েছিলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালকে আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি পুরো অভিযোগ অস্বীকার করে বুঝিয়ে দেন, সরকারি তথ্য ও মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের মধ্যে মিল নেই। জয়সোয়াল বলেন, গঙ্গা চুক্তি নবায়নের বিষয়টির আন্তর্জাতিক পর্যালোচনা হবে। সে জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই কমিটির প্রতিটি বৈঠকে এই চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সবাই যোগ দিয়েছেন। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিও যোগ দিয়েছেন।

জয়সোয়াল বলেন, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল সেই কমিটির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কী পরিমাণ শিল্প ও পানীয় জলের প্রয়োজন, সে কথাও জানানো হয়েছিল। মুখপাত্র জানান, অভ্যন্তরীণ কমিটি তাদের প্রতিবেদন ইতিমধ্যেই পেশ করেছে। আপাতত সেই প্রতিবেদন বিবেচনাধীন।

গঙ্গা চুক্তির সঙ্গে মমতা তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গও তুলেছিলেন। তাঁর অভিযোগের মধ্য দিয়ে এটাই বোঝা যায়, চুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক স্তরে তাঁকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে, কোনো আলোচনা করা হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ ক্ষেত্রেও যা প্রমাণ করতে চেয়েছেন তা হলো, রাজ্য সরকারকে সব আলোচনাতেই রাখা হয়েছে, তবে তা আমলা পর্যায়ে। চুক্তি নবায়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্তরে রাজনৈতিক আলোচনা হবে কি না, এ বিষয়ে সরকারি কোনো ইঙ্গিত অবশ্য নেই।