বাংলাদেশ নিয়ে কী ভাবে পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম
পরাজিত শাসকেরা কী শেখায় তাদের জনগণকে
ইংরেজরা একসময় পৃথিবীর বড় অংশকে উপনিবেশ বানিয়ে রেখেছিল। কিন্তু নিজ দেশের মানুষকে তারা বুঝিয়েছে, এই উপনিবেশ তাদের বোঝা। দখল করে রাখা দেশগুলো ‘হোয়াইট ম্যানস বার্ডেন’। আজও এই কথায় বিশ্বাস করে, এমন ইংরেজের সংখ্যা কম নয়। ভিয়েতনামে আমেরিকানদের যুদ্ধ আর অবর্ণনীয় অত্যাচারের কথা জানেন সবাই। কিন্তু হলিউডের ছবি ‘র্যাম্বো’ বলে উল্টো কথা। ভিয়েতনাম যুদ্ধফেরত এক মার্কিন সৈনিক র্যাম্বো ভিয়েতনামে ফিরে যায় আটক মার্কিন সৈনিকদের মুক্ত করতে।
ভিয়েতকং আর সোভিয়েত সৈনিকদের মেরে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয়। এই ছবি আপনি দেখবেন এ কথা জানা সত্ত্বেও যে মার্কিনরাই দখলদার এবং র্যাম্বোর হাতে খুন হওয়া ভিয়েতনামের মানুষগুলো আসলে নিজের দেশ বাঁচাতে লড়ছিল।
দখলদার রাষ্ট্রগুলো অন্য দেশ দখলের পক্ষে নিজ দেশের জনগণের জন্য একটা বয়ান তৈরি করে। সে বয়ানে দখল আর দখল ছেড়ে আসার পর পরাজয়ের একটা গল্প থাকে। সে দেশের সব প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাব্যবস্থা আর প্রচারমাধ্যম জনগণকে সেটা শেখায়। এর বাইরে অন্য কথা বললে শাস্তিরও ব্যবস্থা থাকে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম আর পাকিস্তান রাষ্ট্রের পরাজয় নিয়ে সে দেশের রাষ্ট্রীয় বয়ান কী বলে? এর পালটা কোনো বয়ান কি আছে সে দেশে? পঞ্চাশ বছর পর তাদের তরুণেরাই বা কী ভাবছে?
কোন কথা চালু আছে বাংলাদেশ নিয়ে পাকিস্তানে
১৯৭১ নিয়ে বাংলাদেশ, ভারত আর পাকিস্তানের প্রত্যেকের নিজস্ব বয়ান আছে। আছে নিজস্ব স্মৃতি। ভারত আর পাকিস্তানে এই যুদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রায়ই তৃতীয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলে উল্লেখিত হয়। আনাম জাকারিয়া তাঁর ‘1971: A People’s History from Bangladesh, Pakistan and India’ বইয়ে লিখেছেন, একজন ভারতীয় সাংবাদিক বলেছেন যে ‘১৯৭১ ভারতের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে গেছে। সেটা সৈনিকদের উদ্দিপ্ত করতে হোক অথবা পাকিস্তানকে হীন করতে। আমরা ভারতীয় হিসেবে নিজেদের যেভাবে দেখি, ১৯৭১ তা পালটে দিয়েছে।… ১৯৭১ ভারতে প্রায় লোককথা হয়ে গেছে।’
১৯৭১ সালে যা হয়েছিল, রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান তার কিছু ইচ্ছা ভুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুদ্ধে পরাজয়ের কাহিনি পাঠ্যবইতে যা লেখা হয়, সেখানে বৈষম্য, নির্মম সামরিক অভিযান আর গণহত্যার কথা আসে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সেখানে ‘সুকুতে ঢাকা’ মানে ঢাকার পতন। এই যুদ্ধে পরাজয় দেশে যে মানসিকতা তৈরি করতে চেয়েছে রাষ্ট্র, তা হচ্ছে- আর যেন এমন না হয়। বেড়েছে সামরিক ব্যয়। ১৯৭২ সালের জানুয়ারির মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাজ শুরু হয়ে যায়।
সব পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন করে সেখানে ভারতবিরোধী মনোভাব জোরদার করা হয়। পাকিস্তানের কোন নীতির ফলে এমন ঘটেছিল, সে কথার কোনো ছাপ সেখানে নেই। তার বদলে ভারত সেখানে শয়তান তৃতীয় পক্ষ, যার ষড়যন্ত্রে এসব ঘটেছে। লাহোরের সামরিক জাদুঘরে একটা ফলক লাগানো আছে, যেখানে বাঙালির স্বাধীনতাসংগ্রামকে ‘ভারতের মদদপুষ্ট সন্ত্রাস’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এখন বেলুচিস্তানিদের সংগ্রাম পাকিস্তান রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একই মেজাজে দমন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছর নিয়ে প্রচারমাধ্যম
রাষ্ট্রের বহাল বয়ান পাকিস্তানের অর্থনৈতিক আর সামাজিক বাস্তবতার পক্ষে যাচ্ছে না। অভ্যন্তরীণ মোট দেশীয় উৎপাদন, মাথাপিছু আয়, প্রবৃদ্ধিসহ সব অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে অনেক এগিয়ে আছে। বাংলাদেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা, শিক্ষা আর নারীদের অগ্রগতি পাকিস্তানের গণমাধ্যমের অন্যতম আলোচনার বিষয়।
পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত দৈনিক দ্য ডন পত্রিকায় বিশ্লেষক সুজা নওয়াজ ২০২২ সালের আগস্টে ১৯৭১ প্রসঙ্গে লিখেছেন। সুজা ছিলেন ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পিটিভির প্রথম সংবাদ প্রচারক। ‘হোয়াট ওয়েন্ট রং ইন নাইন্টিন সেভেন্টি ওয়ান’ লেখাটিতে সংক্ষেপে পাকিস্তানের ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত কড়চা দেওয়া আছে। মোটামুটি দীর্ঘ সেই লেখায় যেসব মাইলফলক তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো, ভাষা সমস্যা, ছয় দফা, অর্থনৈতিক অসাম্য, আইয়ুবের বিদায় আর ইয়াহিয়ার ভুল, অস্থিরতা শুরু, অপারেশন সার্চলাইট, ভারতীয় হস্তক্ষেপ ও ঢাকার পতন।
নিজে উর্দু না জেনেও জিন্নাহর উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চাওয়া, অর্থনৈতিক বৈষম্য আর যুদ্ধের সময় গণহত্যা, পরিকল্পিত ধর্ষণের কথা সেখানে খোলাখুলি বলা হয়েছে। খালিদ ইকরাম ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য। লেখাটি শেষ হয়েছে ইকরামের একটি কথা উদ্ধৃত করে, ‘খুব দুঃখ নিয়েও আমাকে বলতেই হচ্ছে যে পূর্ব পাকিস্তানে সবচেয়ে ভালো যা ঘটেছে তা হলো, সে বাংলাদেশ হয়ে গেছে।’
বিনোদনশিল্প কি ভাঙছে শেখানো কথা?
পাকিস্তানে যেসব তরুণ বিনোদনশিল্পে এগিয়ে আসছেন, তাদের মধ্যে রাষ্ট্র প্রচারিত বয়ানের থেকে ভিন্ন কিছু লক্ষ করা যাচ্ছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে সেখানে মুক্তি পেয়েছে ‘খেল খেল মে’ নামের একটি ছবি। পরিচালক নাবিল কুরেশির জন্ম ১৯৮৫ সালে। ছবিটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে পাকিস্তানের দুই প্রজন্ম নিয়ে। এক প্রজন্ম, যারা ১৯৭১ দেখেছে। আরেক প্রজন্ম তরুণ।
তাদের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া। এই প্রজন্ম রাষ্ট্রীয় বয়ানকে প্রশ্ন করছে, যুদ্ধের লুকিয়ে রাখা সত্য জানতে চাইছে। ছবির টিজারে একজনের কণ্ঠে শোনা যায়, ‘আমরা প্রশ্ন করি না কেন? মিথ্যা অভিযোগের ভার কেন বয়ে বেড়াই? কী হয়েছিল আসলে সেই সময়, এই প্রশ্ন করি না কেন?’
ছবির ট্রেলারের শুরুতেই দিগন্তে উড়োজাহাজ দেখা যায়। আতঙ্কিত মানুষ মাথায় ট্রাঙ্ক নিয়ে পালাচ্ছে। একটা বাক্য ভেসে আসে, যার অর্থ, ‘তোমাদের দেশ ভেঙে গেছে, এখন তোমরা পাকিস্তানে নয়, বাংলাদেশে আছ।’ সিনেমাটিতে যুদ্ধ নেই। বরং বলা যায়, আছে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের ভেতর ‘অতীত’ ক্ষোভের এক মীমাংসার প্রয়াস।
পরিচালক থেকে শুরু করে অভিনয় করেছেন যাঁরা, তাঁরা সবাই তরুণ, মূল ধারায় জনপ্রিয়। বড় বাজেটের ছবি। ছবিতে ভারত ও বাংলাদেশ—দুই প্রতিবেশীর সঙ্গে পাকিস্তানের মূল ধারার বয়ানের পালটা না হলেও সংঘাতের রাজনীতির বিকল্পের কথা বলা হচ্ছে। সিনেমাটিতে একটা গান আছে— ‘নয়া সোচ’, মানে নতুন চিন্তা। সেখানে এক শিখ বন্ধুর সঙ্গে সিনেমার চরিত্ররা যে গান গাইছে, তার কয়েকটি লাইন এ রকম—
‘আলাদা ঘর হোক, থাকুক নাহয় সীমান্ত বন্ধ
হৃদয়ের করিডর যেন খোলা থাকে।
পুরোনো পথে চলে সবাই ক্লান্ত
এবার নতুন চিন্তার ডানা লাগাই চলো।’
মূল নারী চরিত্র জারা ঢাকার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে ১৯৭১-এর সময়ে ফিরে যায়। মনে হয়, সে যুদ্ধের সময়ের ট্র্যাজেডির মূল ঘটনা বের করে আনবে। বহাল বয়ানের ধরন নিয়ে তাকে সন্দিহান মনে হয়। পরিচালক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘ছবির উপসংহার হচ্ছে এই যে অতীতে যা হয়েছে তা হোক, আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে’। অতীত ভুলে মৈত্রীর কথা এই ছবির মূল বার্তা। সে কথা বলা হচ্ছে একটি কবিতায় এভাবে—
‘একই রকম ভালবাসা পাবে
দুজনই যদি হৃদয়ের তল্লাশি নাও
একটা ভুল হয়েছিল, সে যারই হোক
দুজনই ক্ষমা চেয়ে নিই।’
নতুন প্রজন্মের এই সামনে এগোনোর ভাবনা, এই ‘নয়া সোচ’ লক্ষণীয় পরিবর্তন বটে। কিন্তু এর ভেতর অতীতের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেয়ে একে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ে। একটা ভুল হয়েছিল। কার ভুল? এর উত্তর হচ্ছে, ‘সে যারই হোক’।
তরুণদের ভাবনা কী বাংলাদেশ নিয়ে
অন্তর্জাল জগতে, বিশেষ করে ইউটিউবে পাকিস্তানি তরুণদের অনেক ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়, বাংলাদেশ নিয়ে তাঁরা কী ভাবেন, কতটা বা কী জানেন। সাজ্জাদ রিভিউ নামের একটা ইউটিউব চ্যানেলে ইসলামাবাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে এই প্রশ্ন করা হয়েছে। সেখানে একজন বলছেন, ‘হ্যাঁ, ওরা তো আমাদের ভাই।…১৯৭১ সালে ওদের সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা উচিত হয়নি ভুট্টো সাহেবের।’ একই সুর পাওয়া যায় আরেক তরুণের কাছ থেকে, ‘এই দেশ বানানোর পেছনে ওরাও প্রাণ উৎসর্গ করেছে। আমরা ওদের হারিয়েছি নিজেদের আচরণের দোষে।’
এসব তরুণের বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনার প্রধান বিবেচ্য হচ্ছে অর্থনীতি—‘একসময় আমরা ওদের বলতাম দু টাকার জিনিস, মানে সস্তা গরিব। এখন ওদের টাকার মান আমাদের রুপির চেয়ে বেশি।’ আরেকজন বলছেন, ‘বাংলাদেশের কথা শুনলে একটা উদীয়মান দেশের কথা মাথায় আসেম, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যাদের অর্থনীতি ওপরে উঠে আসছে। ওদের শিক্ষা, শিল্প ক্রমেই আমাদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’
এসব তরুণের কাছে বাংলাদেশের আরেক প্রধান পরিচয় ক্রিকেট, অধিকাংশের প্রিয় সাকিব, ‘আমার প্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তিনি একজন স্লো লেফট আর্মার। আমিও তা–ই। আমিও বাঁ হাতে খেলি। আমি সাকিবকে খুব ফলো করি।’ পালাক্রমে তামিম ইকবাল আর মুশফিকের নাম এসেছে।
‘বাংলাদেশে সুযোগ পেলে যেতে চান?’ প্রশ্নের জবাবে একজন বলছেন, ‘নিশ্চয়ই, সেখানকার ব্যবসার পরিবেশ ভালো, শ্রম সস্তা। ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশের আমদানি করা সব জিনিস সেখানে পাওয়া যায়’। এক তরুণের যেতে চাওয়ার কারণ অন্যদের থেকে আলাদা, ‘আমার দাদি আর বাবা দুজনই সেখানে জন্ম নিয়েছেন। আমি দেখব না বাবা আর দাদি কোথায় জন্মেছিলেন?’
ভিডিও শেষে হোস্ট বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে পাকিস্তানের তরুণদের ধারণা বদলে গেছে। আগে অন্য রকম ভাবা হতো। শিক্ষার প্রসার ঘটছে।…তরুণদের ভাবনা বদলাচ্ছে। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগ। সবাই নিজেরাই সার্চ করে, ভিডিও দেখে, জেনে যায়। আগে এমন ছিল না। সরকার যা বলত, যা পড়াত, সবাই তা–ই বিশ্বাস করত। তরুণেরা এখন নিজেরাই খোঁজ করেন যে অতীতে আসলে কী হয়েছিল।’
করাচিতে বাংলা এবং একজন তরুণের ভালোবাসা
১৯৭১ সাল পর্যন্ত করাচির স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে চার হাজার শিক্ষার্থী বাংলায় পড়ালেখা করতেন। এরপর বাংলা নিয়ে বা বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে অধ্যয়নে ভাটা পড়ে। করাচিতে বাঙালি বংশোদ্ভূত বড় জনগোষ্ঠী বাস করে। রাষ্ট্র তাদের এখনো আত্মস্থ করেনি।
বাংলাদেশের উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর অবস্থার সঙ্গে তাদের অনেক মিল পাওয়া যাবে। তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করাচিতে বাংলা চর্চা চলে। এখন পাকিস্তানে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ চালু আছে। ১৯৫৩ সালে শুরু হয় এই বিভাগ। মোহাম্মদ তাহির নামের এক তরুণ সেখানে বাংলা বিভাগে পড়ান।
শিক্ষকতা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতোই একটা পেশামাত্র। আর করাচিতে বাংলা পড়ানো খুব আকর্ষণীয় কিছু হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মোহাম্মদ তাহির বাংলা সাহিত্যের প্রেমে মুগ্ধ।
এই মুগ্ধতা তাঁকে ভাষা থেকে নিয়ে গেছে এই ভাষার মানুষদের কাছে। তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, করাচির বাঙালি বংশোদ্ভূত মানুষদের বাংলা ভাষার কাছে আনার। শিশুদের বাংলা লেখা, পড়া আর শেখানোর প্রয়াস নিয়েছেন। বইপত্র পাওয়া সেখানে খুব সহজ নয়। প্রায়ই তিনি ঘুরে বেড়ান করাচির মুসা কলোনিতে, যেখানে বাঙালি বংশোদ্ভূতদের বাস।
দেখা হয়ে যায় বয়োজ্যেষ্ঠ কোনো বাঙালির সঙ্গে। তাঁরা দোতারা বাজিয়ে এখনো লালনের গান করেন। খবর পেয়ে আরেকজন ছুটে আসেন। বোঝা যায়, তিনিও আসলে গায়ক। ভেজা চোখে তিনি গাইতে থাকেন, ‘আমার সোনার বাংলা....’। গানের কথা এদিক-সেদিক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গাইতে থাকা এই শিল্পীর চোখের জল পৃথিবীর যেকোনো সমালোচককে স্তব্ধ করে দেবে।