অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবস্থান

অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শহীদ মিনারের সামনে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১০ সেপ্টেম্বর
ছবি: জুয়েল শীল

অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। কর্মসূচির একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা এসব দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গণস্বাক্ষর নেওয়া শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের দেওয়া চার দফা দাবি হলো—অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহার করা, আহত শিক্ষার্থীদের সুস্থতার দায়ভার প্রশাসনের নেওয়া, শাটল ট্রেনে সব শিক্ষার্থীর আসন নিশ্চিত করে ফিটনেসবিহীন বগি সংস্কার করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও পর্যাপ্ত ওষুধ নিশ্চিত করা।

আরও পড়ুন

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে যাওয়ার সময় হেলে পড়া গাছের সঙ্গে ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৬ শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের মধ্যে তিনজন এখনো চিকিৎসাধীন। এ ঘটনা কেন্দ্র করে ওই দিন রাত ১২টার দিকে ৬৫টি যানবাহন, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষক ক্লাব ও পুলিশ বক্স ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এরপর গতকাল শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখসহ ১ হাজার অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে ছিলেন বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শাটলের ভেতরে জায়গা পাওয়া যায় না। এ কারণে বাধ্য হয়ে ছাদে উঠতে হয়। তিনিও ওই দিন রাতে ভেতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে উঠেছিলেন। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ জায়গার অভাবে ছাদে না ওঠেন, আর কেউ যেন এমন দুর্ঘটনার শিকার না হন; সে ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে করতে হবে।

আরও পড়ুন

সংস্কৃত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পূজা প্রামাণিক বলেন, শিক্ষার্থীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে অজ্ঞাতনামা মামলা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানির উদ্দেশ্য নিয়ে এ মামলা করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো মানতে হবে।

মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুজ্জামান রেদোয়ান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের কী ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়টি প্রচার করল। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে বলে প্রশাসন বারবার বলেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো শিক্ষার্থীদের হয়রানির জন্য অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব নৈরাজ্য হতে দেওয়া যায় না। এসবের প্রতিবাদে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচিতে দাঁড়িয়েছেন।

আরও পড়ুন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য যে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নিতে রেলওয়েকে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আবার বলা হবে। আর অজ্ঞাতনামা এ মামলায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই হয়রানির শিকার হবেন না বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

আরও পড়ুন