নারী ইউএনওকে গার্ড অব অনার দিতে বাধা দেওয়ার নিন্দা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুর পর নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) গার্ড অব অনার দিতে বাধা দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। গার্ড অব অনার দিতে নারী ইউএনওকে বাধা দেওয়ায় সংগঠনটি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সমালোচনা করে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করারও আহ্বান জানিয়েছে।

আজ রোববার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে মহিলা পরিষদ এই আহ্বান জানায়।

মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, সখীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ খানের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মাননা (গার্ড অব অনার) দিতে নারী ইউএনওকে বাধা দেন কাদের সিদ্দিকী। একই সঙ্গে তিনি একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে গার্ড অব অনার দেওয়ার প্রস্তাব করেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতার এমন অগ্রহণযোগ্য, সংবিধান পরিপন্থী, নারীর মানবাধিকার পরিপন্থী অবস্থানের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের আচরণ নারীর জন্য যেমন অবমাননাকর, ঠিক একইভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও জাতির জন্যও অপমানজনক। কেননা, একটি স্বাধীন সার্বভৌম নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে নারী ইউএনও বলে কোনো পদ নেই। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে নারী–পুরুষ বিভাজন সংবিধানবিরোধী। নারী-পুরুষনির্বিশেষে পদাধিকারবলে যাঁদের ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তাঁরা সেই রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবেন, এটাই প্রত্যাশিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, এর আগে ২০২১ সালের ১৩ জুন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও নারীকে অবদমিত করার কূটকৌশল হিসেবে এ ধরনের প্রস্তাব করেছিল; যা পরে নারী ও মানবাধিকার আন্দোলনের তীব্র প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বাতিল করা হয়। নারীর ক্ষমতায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এ ধরনের যেকোনো কূটকৌশল ও বিভিন্ন অজুহাতকে প্রতিহত করার জন্য সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দলসহ সবার প্রতি আহ্বান জানায় মহিলা পরিষদ।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন