রিউমর স্ক্যানার
চীনের হ্যালোইন উৎসবের ভিডিওকে বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিকে পোড়ানো বলে অপপ্রচার
বাংলাদেশে ‘হিন্দু ব্যক্তি’কে পোড়ানো হচ্ছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স, ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান (ফ্যাক্ট চেক) রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, ওই ভিডিও বাংলাদেশের কোনো ঘটনা নয়। এটি চীনের একটি উৎসবের দৃশ্য।
১২ ডিসেম্বর এক্স, ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে হিন্দি ভাষায় দাবি করা হয়, এটি বাংলাদেশে হিন্দু ব্যক্তিকে পোড়ানোর দৃশ্যের।
রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের বা বাংলাদেশে কোনো হিন্দু ব্যক্তিকে পোড়ানোর দৃশ্যের নয়। ভিডিওটি অন্তত ৬ বছর আগে চীনে হ্যালোইন উদ্যাপনের দৃশ্যের। ভিডিওটির বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে রিউমর স্ক্যানার একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে এ ধরনের ভিডিও পেয়েছে, যা বেশ কয়েক বছর আগে বিভিন্ন জায়গা থেকে পোস্ট করা হয়েছিল।
রিউমর স্ক্যানার এসভিআইএটিএমই (SviatMe) নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর প্রচারিত হ্যালোইন পার্টির ভিডিও পায়। ভিডিওটির ৫ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের পরবর্তী সময়ের ভিডিও ফ্রেমের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘটনা বলে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ভিডিওটি থেকে জানা যায়, দৃশ্যটি চীনের গুয়াংডং প্রদেশের ঝুহাইয়ের একটি হ্যালোইন পার্টির দৃশ্য। এ ছাড়া গ্যালাক্সিচাওলং নামের এক ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্টেও ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর অনুরূপ ভিডিওটি পাওয়া যায়। এর স্থান হিসেবেও চীনের গুয়াংডং উল্লেখ করা হয়েছে। এই অ্যাকাউন্ট থেকে ওই একই দিনের হ্যালোইন পার্টির আরও একাধিক ভিডিও ও ছবি পোস্ট করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার বলেছে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সিনচু নামের চীনা ভাষার একটি ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে ২০২০ সালে চীনা ভাষায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, প্রচারিত ভিডিওটি নাইজেরিয়ার দাবিতে প্রচার করা হলেও আদতে এটি চীনের একটি হ্যালোইন পার্টির দৃশ্য।
এ ছাড়া ভিডিওটি নিয়ে আন্তর্জাতিক একাধিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে দেখা যায়, ভিডিওটি আগেও নানা ভুয়া দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তবে ভিডিওটি মূলত চীনের এবং মানুষসদৃশ যা পোড়ানো হচ্ছে, তা আসল মানুষ নয়।
অর্থাৎ চীনের হ্যালোইন উৎসবে মানুষসদৃশ বস্তু পোড়ানোর পুরোনো একটি দৃশ্যকে বাংলাদেশে সম্প্রতি হিন্দু ব্যক্তিকে পোড়ানো হচ্ছে দাবিতে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে।