শিক্ষার্থীদের দমন-পীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ উত্তর আমেরিকায় অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষাবিদদের

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়ফাইল ছবি

বাংলাদেশে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ওপর সাম্প্রতিক দমন-পীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগের পাশাপাশি নিন্দা জানিয়েছেন উত্তর আমেরিকায় অবস্থানরত ৫০ বাংলাদেশি যোগাযোগ শিক্ষাবিদ।

আজ শুক্রবার বাংলাদেশি কমিউনিকেশন স্কলারস ইন নর্থ আমেরিকার (বিসিএসএনএ) এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। উদ্বেগ ও নিন্দা জানানো ব্যক্তিরা বিসিএসএনএর সদস্য।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিসিএসএনএর উল্লিখিত সদস্যরা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন। এই শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ন্যায়সংগত প্রতিবাদ করে আসছেন। পাশাপাশি এখন তাঁরা নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনাসহ চলমান আইনি হয়রানির বিচার দাবি করছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিসিএসএনএর সদস্যরা অন্যায্য কোটাব্যবস্থা সংস্কারে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। পাশাপাশি বৃহত্তর রাজনৈতিক সংস্কার ও হত্যাকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার ক্রমবর্ধমান দাবির প্রতি তাঁরা সমর্থন জানাচ্ছেন।

বিসিএসএনএর সদস্যরা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে রায় দিয়েছেন, যা সরকারকে সামনের মাসগুলোতে বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে সিদ্ধান্তটি এসেছে অনেক দেরিতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাইয়ের মাঝামাঝি এই তরুণেরা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারি চাকরিতে ন্যায্য সুযোগের পক্ষে কথা বলছিলেন। সরকার প্রথমে বিক্ষোভকারী ও তাঁদের দাবির প্রতি অসম্মান দেখিয়েছে। তারপর তাঁদের দমাতে সব শক্তি নিয়োগ করেছে। প্রায় ক্ষেত্রে কাছ থেকে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের ওপর গুলি চালানো হয়।

একাধিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯ জুলাই সরকার দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়। গণমাধ্যম ও টেলিকম কার্যক্রমে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে তথ্য ও যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হয়।

বিসিএসএনএর সদস্যরা বলেন, এ ধরনের বেপরোয়া পদক্ষেপ দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দেশের ভেতর ও বাইরে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সীমিত যোগাযোগ ও চলাচল এখন সম্ভব হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে হত্যাকাণ্ডের ভয়ংকর বিবরণ প্রকাশিত হচ্ছে। এটি দেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ভবিষ্যৎকে কলঙ্কিত করতে থাকবে।

এতে আরও বলা হয়, এখন পর্যন্ত দায় নেওয়া ও দায়িত্বে থাকা নির্বাহীদের বরখাস্তের পরিবর্তে সরকার স্বভাবসুলভভাবে কোনো অন্যায়ের কথা অস্বীকার করেছে। বিশৃঙ্খলার জন্য তারা বিরোধী রাজনৈতিক দল, এমনকি সামাজিকমাধ্যমকে দায়ী করেছে। এটা দুঃখজনক।

বিসিএসএনএর সদস্যরা প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মঙ্গলের বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

বিবৃতি দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ফাহমিদুল হক, আনিস রহমান, ইমরান মজিদ, খায়রুল ইসলাম, সুমন আলী, শাহ জাহান শুভ, জাহেদুর আরমান, নিশাত পারভেজ, নূর ই মকবুল, নাজমা আক্তার, শিরিন ফারহানা, প্রিয়াংকা কুণ্ডু, আসাদুজ্জামান প্রমুখ।