বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। একই সঙ্গে দেশটি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ সোমবার গণভবনে সাক্ষাৎ করেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাজ্যের এ আগ্রহের কথা জানান।
সাক্ষাতের পর সংবাদ সম্মেলনে সারাহ কুককে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে, বিশেষ করে নারীশিক্ষার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
বৈঠকে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার বলেন, তাঁরা চান বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দীর্ঘ ২১ বছর সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত ও ৫০০ জনের বেশি আহত হওয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাসহ তাঁর প্রাণনাশে ১৯ বার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত ২০০১ সালে তাদের বিজয় উদ্যাপন করেছিল সন্ত্রাসের রাজত্ব জারি করে শত শত মানুষকে হত্যা করে, পাশাপাশি সারা দেশে গ্রামে গ্রামে ধর্ষণ ও লুটপাটের মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘আমরাই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেছি ও গণমাধ্যমকে বেসরকারি খাতের জন্য উন্মুক্ত করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে, ততই বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। তিনি আশা করেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যথাযথ মনোযোগ মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনকে ত্বরান্বিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান কক্সবাজার অঞ্চলে সামাজিক সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার বলেন, বিষয়টি আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত হবে। তিনি রোহিঙ্গাদের শিক্ষা এবং তাদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলেন, যাতে তারা তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে পুনরায় কর্মসংস্থান করতে পারে।
বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আঞ্চলিক বিষয়ের মতো বিভিন্ন বিষয়ও আলোচিত হয়। এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ এবং সম্পর্ক আরও সুসংহত করারও আশা প্রকাশ করা হয়।
জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়ভাবে জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে আরও এগিয়ে নিতে দুই দেশ চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সাক্ষাতের সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত (অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ) মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।