ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে সেমিনার: অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষানীতি প্রণয়নের কৌশল নিয়ে আলোচনা

সেমিনার শেষে অতিথিদের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের একাংশছবি: ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে সম্প্রতি রূপান্তরমূলক ভাষানীতিবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজেসের আয়োজনে এই সেমিনারে অন্তর্ভুক্তিমূলক ভাষানীতি প্রণয়নের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়।

সেমিনারে বক্তারা এমন কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল চিহ্নিত করেন, যা দেশের ভাষাগত সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা, বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভাষা সংরক্ষণে সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে সহায়ক হবে। এই উদ্যোগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ছিল, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও আগ্রহ সৃষ্টি করা।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষাবিদ সলিমুল্লাহ খান
ছবি: ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সৌজন্যে

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষাবিদ ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের জেনারেল এডুকেশন প্রোগ্রামের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ও ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনসুর মুসা। তাঁরা দুজনই ভাষানীতি ও চর্চায় রূপান্তরমূলক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দেন, যা বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় ভাষা ও সংস্কৃতিকে স্বীকৃতি ও সুরক্ষা দিতে পারে।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘উপনিবেশ-পরবর্তী মধ্যবিত্ত শ্রেণির ইংরেজিপ্রীতি আসলে একধরনের মানসিক উপনিবেশের প্রতিফলন। এই প্রবণতা আমাদের নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি দূরত্ব তৈরি করে।’ তাঁর মতে, প্রকৃত স্বাধীনতা মানে হলো এই আত্মবিচ্ছিন্নতা থেকে মুক্তি এবং নিজের পরিচয় ও সংস্কৃতিকে সচেতনভাবে ফিরিয়ে আনা।

অধ্যাপক মনসুর মুসা তাঁর বক্তব্যে বাংলায় ঔপনিবেশিক যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভাষানীতির বিবর্তন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে বাংলাদেশে বিজ্ঞানভিত্তিক, বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া ভাষানীতি প্রণয়নের।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজেসের পরিচালক অধ্যাপক শায়লা সুলতানা সেমিনারে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন। সেমিনারের শেষে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীরা ১০টি ভাষায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। পরিবেশনাগুলো ছিল দেশের বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনন্য উদ্যাপন।