চট্টগ্রাম নগরে একটি পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সদস্য শহীদুল করিম ও নুরুল ইসলাম। একই সঙ্গে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য আগামী সোমবার দিন ধার্য করেন আদালত। আজ শনিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এই আদেশ দেন।
এদিকে সংগীত পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো পূজা কমিটির নেতা (ঘটনার পর বহিষ্কৃত) সজল দত্তকে খুঁজছে পুলিশ। তাঁকে পাওয়া গেলে কেন পূজামণ্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে সংগীত পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তা জানা যাবে। কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সজল দত্ত কি স্বেচ্ছায় তা করেছেন নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল, তা গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসবে।
গত শুক্রবার রাতে নগরের পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের আজ আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, আদালত দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন কমিটির অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। এতে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ছয় সদস্য শহীদুল করিম, নুরুল ইসলাম, আবদুল্লাহ ইকবাল, মো. রনি, গোলাম মোস্তফা ও মো. মামুনকে এবং গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করা চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকেও (ঘটনার পর বহিষ্কৃত) আসামি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে দুর্গাপূজার অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে গান করেন সজল ছাড়া বাকি ছয় আসামি।
মামলায় বলা হয়, ঘটনার দিন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পী অনুষ্ঠানে আসেন এবং দুটি গান পরিবেশন করেন। এর মধ্যে একটি গানের ভাষার শব্দচয়নে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার মতো মনে হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা চিন্তা করে পূজা উদ্যাপন কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে গান বন্ধ করেনি।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ঘটনার দিন রাতে পূজামণ্ডপটিতে যান। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।