এবার ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেল ঢাকার রিকশাচিত্র
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ঢাকা শহরের ‘রিকশা ও রিকশাচিত্র’।
আজ বুধবার ইউনেসকোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আন্তসরকার কমিটির ১৮তম অধিবেশনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে রিকশা ও রিকশাচিত্র বৈশ্বিক বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল।
এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাউলগান (২০০৮), জামদানি বুননশিল্প (২০১৩), মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬) ও শীতলপাটি বুননশিল্পের (২০১৭) পর পঞ্চম বিমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’ তালিকায় স্থান পেল রিকশা ও রিকশাচিত্র।
আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসান শহরে গত সোমবার শুরু হয় ইউনেসকোর আন্তসরকার কমিটির ওই অধিবেশন। আজ বুধবার প্রায় তিন ঘণ্টার অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমূর্ত ঐতিহ্য। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর উপস্থাপন করা হয় তাঁদের নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্য।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মুহম্মদ তালহা ও দূতাবাসের প্রথম সচিব ওয়ালিদ বিন কাশেম।
এ অধিবেশন ইউনেসকোর ইউটিউব অ্যাকাউন্টে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় শুরু হয় আজকের অধিবেশন।
এতে বাংলাদেশের রিকশা ও রিকশাশিল্প নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। তাতে বলা হয়, ঢাকা শহরের তিন চাকার এই বাহনে থাকে নানা রঙের বৈচিত্র্য। বাহন হিসেবে শহরের মানুষের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে রিকশা। একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, রিকশাচিত্র শুধু একটি শিল্প নয়, এটি মানুষের সমকালীন জীবনের গল্প বলার চলমান ক্যানভাস। রিকশাচিত্রের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে শুরু করে নানা বিষয়ের মধ্যে চলচ্চিত্রের অভিনেতাদের মুখচ্ছবিও উঠে আসে।
‘বিমূর্ত ঐতিহ্যের সুরক্ষা’ স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া ইউনেসকোর এ অধিবেশনে এবার আরও স্বীকৃতি পেয়েছে ভারতের গরবা, মধ্যপ্রাচ্যের হারিসসহ সাতটি ঐতিহ্য এবং কিউবা, মেক্সিকোর বলেরোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আরও বেশ কিছু বিমূর্ত ঐতিহ্য।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটি বুননকৌশলকে বিমূর্ত সংস্কৃতি ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।
ইউনেসকোর নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হয়ে বাংলা একাডেমি রিকশা ও রিকশাচিত্রের বিষয়টি পাঠিয়ে দেয়। তবে এর কাজ শুরু হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। ২০১৮ সালের ইউনেসকোর আন্তসরকার কমিটির ১৩তম অধিবেশনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তথ্য হালনাগাদ করার উদ্দেশ্যে এ–সংক্রান্ত ফাইলটি ফিরিয়ে আনা হয়। নানা পর্যায়ে সংশোধনের পর সেটি ইউনেসকোর স্বীকৃতির জন্য আবার পাঠানো হয়। ২০২২ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় নথি নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়।
ইউনেসকোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর আন্তসরকার কমিটির ১৮তম অধিবেশন শেষ হবে আগামী শনিবার।