এমপি মহিউদ্দিনের স্ত্রীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা

নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পিস্তল উচিয়ে শামীম আজাদ। গত রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ডিগ্রি কলেজ ভোট কেন্দ্রেছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে গত রোববার নির্বাচনের দিন গুলি করে হত্যার চেষ্টা, মারধর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম-১০ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য (এমপি) মো. মহিউদ্দিনের স্ত্রী জিন্নাত মহিউদ্দিনসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাং সালাউদ্দিনের আদালতে মামলাটি করেন গুলিতে আহত শান্ত বড়ুয়া। তিনি ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলমের অনুসারী।

মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন খুলশী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হোসেন, তাঁর স্ত্রী মোছাম্মৎ কাজল, হোসেনের অনুসারী মাহমুদুর রহমান, কামাল ওরফে কাঁচি কামাল ও রাবেয়া মুন্নী।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী তারিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

মামলার অভিযোগে বাদী নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলমের সমর্থক দাবি করেন। মামলায় বলা হয়, বাদী নগরের এমইএস কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় আসামিরা বাদীকে প্রচারণা শুরুর পর থেকে হুমকি দিয়ে আসছেন। গত রোববার নির্বাচনের দিন বাদী নগরের খুলশী পাহাড়তলী ডিগ্রি কলেজ ভোটকেন্দ্রের চার শ গজ দূরে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় নৌকার প্রার্থী মো. মহিউদ্দিনের নির্দেশে আসামি মোহাম্মদ হোসেন তাঁর কোমরে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি করতে থাকেন। গুলিটি তাঁর পেটের মাঝখানে নাভির ওপর গিয়ে লাগে। আহত অবস্থায় বাদীকে অন্য আসামিরা লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে পেটাতে থাকেন।

জানতে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন খুলশী থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন কি ঘটেছে, কারা গুলি করেছে, সবাই জানেন। বাদী শান্ত বড়ুয়া এই এলাকার ভোটার নন। তিনি এই কেন্দ্রে আসেন ভাড়াটে হিসেবে।

আরও পড়ুন

উল্লেখ্য, গত রোববার চট্টগ্রাম-১০ আসনের খুলশীর পাহাড়তলী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম-১০ আসনের খুলশীর পাহাড়তলী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শামীম আজাদকে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন দুজন। তাঁরা হলেন শান্ত বড়ুয়া (৩০) ও মো. জামাল (৩২)।

আসনটিতে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়েন মো. মহিউদ্দিন। ফুলকপি প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম। নির্বাচনী জয়ী হয়েছেন মহিউদ্দিন।

এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ জামালের স্ত্রী হাজেরা বেগম বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতে খুলশী থানায় মামলা করেন। এতে শামীমকে ১ নম্বর আসামি করা হয়। বাকি ৬ আসামি হলেন ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী রোমানা চৌধুরী, ওয়াসিমের অনুসারী কাজী কাউসার, মো. সুমন ও মো. পারভেজ। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয় এই মামলায়। এর মধ্যে শামীমকে গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ওয়াসিম স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছিলেন।