বিদেশি কূটনীতিকেরা এবার অনেক আগে থেকেই সক্রিয়: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকেরা অতীতের চেয়ে এবার অনেক আগে থেকেই সক্রিয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আজ সোমবার সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন আর ২০২৩ সালের নির্বাচনের বাস্তবতা একই কি না, জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমি কোনো পরিবর্তন দেখি না। তাঁরা (কূটনীতিক) বলতে পারবেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তাঁদের এতটা সক্রিয় দেখিনি এখন তাঁরা যতটুকু সক্রিয়। এবার তাঁরা অনেক দিন আগে থেকেই সক্রিয় হয়েছেন। এর উদ্দেশ্য ও কারণ তাঁরা বলতে পারবেন। তবে পরিষ্কারভাবে বলি, কে নির্বাচনে এল বা এল না—এটা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য বা গণতন্ত্র গ্রহণযোগ্য কি না, সেটার নিয়ামক নয়।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন, ‘সরকার এবং আওয়ামী লীগ চায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। কিন্তু কোনো দল যদি না আসে, আমরা তো কাউকে পালকি পাঠিয়ে নির্বাচনে নিয়ে আসব না।’
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, সরকার এমনকি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায়। তবে এটা নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আপনি এখন লন্ডন থেকে নমিনেশন নেবেন, না মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া বা ঢাকা থেকে নেবেন, সেই সিদ্ধান্ত কেউ না নিতে পারলে তার দায়ভার তো আমরা নেব না।’
গত ১৭ জুলাই ঢাকার উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তবে সেই হামলাকে তিনি নির্বাচনী সহিংসতা বলতে নারাজ। তাঁর মতে, এটি নির্বাচন শেষ হওয়ার ২০ মিনিট আগে হয়েছে এবং এটি নির্বাচনের ফলাফলকে কোনোভাবে প্রভাবিত করেনি।
হিরো আলমের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে ১৩ রাষ্ট্রদূতের দেওয়া বিবৃতিতে ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘন হয়েছে এবং সরকার ওই দেশগুলোকে বিষয়টি জানিয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন কংগ্রেস সদস্য জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ডকে লেখা এক চিঠিতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন। এর আগেও একাধিক কংগ্রেস সদস্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই চিঠিগুলোকে সরকার ‘গুরুত্ব দিচ্ছে না’ বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা যখন এ ধরনের অবস্থার মধ্যে আছি, তখন কে চিঠি দিল না দিল… নির্বাচনের আগে এ ধরনের চিঠি অনেক আসতে পারে। এটি অনেক আগে আপনাদের আমরা বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতা বা কংগ্রেসম্যানরা লিখছেন। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আমাদের খুবই গঠনমূলক বৈঠক হয়েছে বেশ কয়েকটি। সম্প্রতি যে সফরগুলো হয়েছে, তাদের যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল, যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি ও যে অগ্রগতি হয়েছে...এবং সেগুলোয় তাঁরা প্রশংসা করেছে। আমরা খুব দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলাম যে এ ধরনের যোগাযোগ থাকলে সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’
তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগে যেটি করতাম না, এখন করছি। সেটি হচ্ছে, আমাদের দূতাবাস ওই কংগ্রেসম্যান বা সিনেটর বা রাজনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এই যোগাযোগের ফলে বের হয়ে এসেছে, একজন বলেছেন আমি তো সই করিনি, কিন্তু আমাকে সই করতে বলেছিল। আরেকজন বলেছেন, আমি তো আংশিক দেখে আমার স্টাফদের দেখতে বলেছি।’