ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুহসীন হলের প্রাক্তন ছাত্রদের স্মৃতিচারণা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সুবর্ণজয়ন্তী ও প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আজ শুক্রবার স্মৃতিচারণা করেছেন হলের প্রাক্তন ছাত্ররা।
আজ দুপুরে হলের মাঠে এই অনুষ্ঠান হয়। মুহসীন হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছিলেন প্রধান অতিথি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে কোনো প্রধান অতিথি বা গেস্ট বা মন্ত্রীর দরকার নেই। এখানে আমি আসব মুহসীন হলের প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র হিসেবে। সবাই আমরা প্রাক্তন, আমরা আড্ডা দেব, একসঙ্গে খাব, পুরোনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করব, হাসি-খুশিতে সময়টা কাটিয়ে দেব।’
ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মাহ্ফুজ আনাম এখন দেশের শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ১৯৬৭ সালে অ্যাটাচড ছাত্র হিসেবে মুহসীন হলে যোগ দিই৷ ১৯৭০ সালে হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। মুহসীন হলের সেই আনন্দময় দিনগুলোকে হৃদয়ে রেখে স্মরণ করি। এটা আমার জীবনের অত্যন্ত গৌরবময় একটা অধ্যায়।’
হল সংসদের সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) মুজিবুল হক চুন্নু এখন জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের মনোনয়ন নিয়ে আমি মুহসীন হল সংসদের ভিপি হয়েছিলাম। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন সব একসঙ্গে হলে থাকলেও খুব একটা মারামারি-কাটাকাটি বা বিশৃঙ্খল পরিবেশ হয়নি। এটা ভালো পরিবেশ ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুহসীন হলের ছাত্র—এটা আমার জন্য একটা প্রাউড (গর্ব)। ৪০ বছর পর আজকে এখানে এলাম। এই সুযোগ করে দিয়েছে মুহসীন হল অ্যালামনাই। এ জন্য তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
হল সংসদের সাবেক ভিপি গোলাম কুদ্দুছ বর্তমানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘মুহসীন হলের প্রাক্তন ছাত্র—এটাই এই অ্যাসোসিয়েশনে আমাদের একমাত্র পরিচয় হওয়া উচিত। এর ভিত্তিতেই অ্যাসোসিয়েশনকে গড়ে তুলতে পারলে এটা সর্ব গ্রহণযোগ্যতা পাবে। মুহসীন হল বহু গৌরবের অধিকারী জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রশাসন, সংস্কৃতি, খেলাধুলাসহ সব ক্ষেত্রে জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো বহু বরেণ্য ব্যক্তি এই হলে তৈরি হয়েছেন। এই হলের গৌরবের ইতিহাস বলে শেষ করা যাবে না।’
এর আগে পুনর্মিলনীর মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কড়া সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, পরিবেশটা অ্যালামনাইয়ের মতো হয়নি। উপস্থিতি কম হওয়া নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। বক্তব্যের সময় সবার নাম উল্লেখ করা ও বিশেষণ ব্যবহার করায় সময় নষ্ট হয় বলেও মন্তব্য করেন। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে অরাজনৈতিক রাখার আহ্বান জানান কাদের।
অ্যালামনাইয়ের এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান৷ মুহসীন হল অ্যালামনাইয়ের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নিজামুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ব্যবসায়ী ও সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ফজল প্রমুখ।