পিটার হাসের বাসায় আফরিন আক্তারের সঙ্গে নাগরিক সমাজের চা–চক্র

চা–চক্রে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা
ছবি : যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতির পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বাসায় এ চা–চক্র হয়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নাগরিক সমাজের কাজের ক্ষেত্র নিয়ে জানতে চান আফরিন আক্তার।

চা–চক্রে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক নাসিরুদ্দীন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন।

চা–চক্রে উপস্থিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি নাগরিক সমাজ কীভাবে দেখছে এবং তাঁদের ভূমিকা কতটা, ভিসা নীতির মতো মার্কিন পদক্ষেপ সুষ্ঠু নির্বাচনে কতটা ভূমিকা রাখছে বা রাখবে, নাগরিক সমাজের কাজে প্রতিবন্ধকতাগুলো কী কী— এসব বিষয় নিয়ে জানতে চান যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার।

চা–চক্রে উপস্থিত দুই অতিথি প্রথম আলোকে জানান, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে তাঁরা জনগণের অংশগ্রহণ এবং দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অংশ নেওয়ার ওপর জোর দেন। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মতে, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের ভোট পাওয়ার হার প্রায় সমান সমান। তাই পছন্দের দল ও প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ জনগণকেই দিতে হবে।

এ সময় আফরিন আক্তার অতিথিদের জানান, যুক্তরাষ্ট্রও চায় জনগণ ভোট দিক। অবশ্যই যেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে তাদের পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার যথাযথ সুযোগ থাকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চা–চক্রে অংশ নেওয়া নাগরিক সমাজের একজন প্রতিনিধি জানান, নির্বাচনকালীন সরকারের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় আমন্ত্রিতদের প্রায় সবাই জানান, বর্তমান নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক কোনো গণতান্ত্রিক ফল আশা করা উচিত হবে না।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, নিষেধাজ্ঞার ফলে র‌্যাবের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা কমেছে। তাঁর মানে এই নয় মানবাধিকারকর্মীরা চাপ বোধ করেন না। নির্বাচনের ব্যাপারে কি হবে বলা দুরহ। রাজনৈতিক ভারসাম্য না থাকায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কাজ করার ঝুঁকি বাড়ে।

চা–চক্রে অংশ নেওয়া দেবপ্রিয় ভট্টচার্য প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অর্থনীতি নিয়ে অনুমানের জায়গা কমিয়ে দিচ্ছে। অর্থনীতির এ অবস্থার কারণ দক্ষতা, সংস্কার ও মনোযোগের অভাব। অর্থনীতি এই অবস্থায় থাকলে আগামীতে তা রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। এ নিয়ে আলোচনায় কথা বলেছি।

চা-চক্রে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশের জনগণকেই ভূমিকা রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে এমনটা যাতে মনে না হয়।