রোহিঙ্গা ঢলের ছয় বছর
ডিসেম্বরের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরুর আশা
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের একটি দলকে রাখাইনে পাঠিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে হলেও প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ সরকার।
ঠিক ছয় বছর আগে এই দিনে (২৫ আগস্ট) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণ বাঁচাতে হাজারো রোহিঙ্গা নারী–শিশু–পুরুষের ঢল নেমেছিল বাংলাদেশে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে প্রাণ বাঁচাতে পরের কয়েক মাসে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা নাফ নদী পেরিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল বাংলাদেশে। তখনই আশঙ্কা করা হয়েছিল, রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধান হবে না। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য এখনো সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়নি। তবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ কখনো দ্বিপক্ষীয়, কখনো চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে গেছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে তারিখ ঘোষণার পরও দুই দফায় প্রত্যাবাসনের চেষ্টা বিফলে গেছে। আবার ২০২১ সালে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়।
এমন এক অনিশ্চিত প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। আবার রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থসহায়তাও কমে আসছে। চলতি বছর তাদের জন্য যে সহায়তা সংগ্রহের কথা, তার মধ্যে মাত্র ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ পাওয়া গেছে।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসনে কারও বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয়।মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
সামগ্রিক এই পরিস্থিতিতে চীনের মধ্যস্থতায় আবারও রোহিঙ্গাদের একটি দলকে প্রত্যাবাসন করতে বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ। পরীক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় প্রথমে ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে রাখাইনে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল।
পরে গত এপ্রিল মাসে চীনের কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে মোট ৭ হাজার ১৭৬ রোহিঙ্গাকে রাখাইনে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু এপ্রিলে নেওয়া সিদ্ধান্ত গত সাড়ে তিন মাসেও বাস্তবায়ন করা যায়নি। এখন বাংলাদেশ সরকার চাইছে, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ছোট একটি দলকে রাখাইনে পাঠিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে হলেও প্রত্যাবাসন শুরু হোক। এ বিষয়ে চীন তাগাদা দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
মিয়ানমারের সামরিক শাসন, রাখাইনে অনুকূল পরিবেশের অভাব এবং রোহিঙ্গাদের অনীহা—এসব বিষয় সামনে এনে পশ্চিমা দেশগুলো চীনের মধ্যস্থতায় প্রত্যাবাসনের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের বিরোধিতা শুরু থেকেই করে আসছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো এবং জাতিসংঘ বলছে, সহায়ক পরিবেশ ছাড়া প্রত্যাবাসন শুরু করা ঠিক হবে না। অথচ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে জাতিসংঘের যে চুক্তি হয়েছিল, সেটির মেয়াদ গত মার্চে শেষ হয়ে গেছে।
আবার মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর পশ্চিমা দেশ ও জোট এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকে সরিয়ে রেখে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশটির গণতান্ত্রিক উত্তরণে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের প্রত্যাবাসনের পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পশ্চিমারা প্রশ্ন তুলছে।
শুধু ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান বের করা খুব মুশকিল।মো. শহীদুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম গত বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসনে কারও বাধা সৃষ্টি করা উচিত নয়। এ ধরনের পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন বড় আকারে প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো বুঝতে সহায়তা করবে। বড় ধরনের প্রত্যাবাসনের আগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার জন্যই এই পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন। নিয়মিত প্রত্যাবাসন শুরুর আগে আরও ভালোভাবে পরিকল্পনার করার জন্য এবং সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে এই প্রত্যাবাসন সহায়তা করবে। এতে কারও বাধার সৃষ্টি করা উচিত হবে না।
রোহিঙ্গা ঢলের বর্ষপূর্তিতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশে আশ্রিত নতুন ও পুরোনে মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সেবায় আর্থিক সহায়তা এবং তাদের সংকট সমাধানে রাজনৈতিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থীশিবিরের মানবিক পরিস্থিতি যখন খারাপ হচ্ছে, তখন এই দীর্ঘায়িত সংকটকে ঘিরে চ্যালেঞ্জগুলো ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তহবিলের তীব্র স্বল্পতার কারণে মানবিক সংস্থাগুলো শুধু অতিগুরুত্বপূর্ণ ও জীবন রক্ষাকারী চাহিদা মেটানোর ওপর নজর দিতে বাধ্য হচ্ছে।
প্রত্যাবাসন কত দূর
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার চুক্তি সই করেছিল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, পরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার পৃথকভাবে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে চুক্তি করে। দুই দেশের সঙ্গে চুক্তির ধারা অনুযায়ী, ইউএনএইচসিআর প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নে যুক্ত থাকবে। কিন্তু ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে চীন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রয়াস নিয়ে ইউএনএইচসিআর প্রশ্ন তুলেছে।
ইউএনএইচসিআরের এমন ভূমিকায় বাংলাদেশ অসন্তুষ্ট। জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থাটির ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে সম্প্রতি ঢাকায় তাদের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল।
ওই সময় তাঁকে বলা হয়েছিল, ইউএনএইচসিআর যে দেশে থাকে (শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করে), সেখানে প্রত্যাবাসন হয় না—এমন একটা ধারণা বদ্ধমূল আছে। এমন ভাবমূর্তি থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করুক ইউএনএইচসিআর।
চীনের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত কোনো ফলাফল আসবে কি না—এমন প্রশ্নে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যুক্ত জ্যেষ্ঠ একজন সরকারি কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, চীনের বিশেষ দূত দেং সি জুন গত জুলাই মাসে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এ নিয়ে দুই দফায় ঢাকায় আসার আগে মিয়ানমার ঘুরে এসেছেন। তিনি গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে আশ্বস্ত করে গেছেন, রোহিঙ্গাদের রাখাইনের উত্তর মংডুতে তাদের আদি নিবাসে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার এখন রাজি।
রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের পর রাখাইনের বসতিগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। তাহলে রোহিঙ্গারা মংডুতে গিয়ে কোথায় থাকবে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা জানান, মংডুতে ফিরে গিয়ে শুরুতে রোহিঙ্গারা অস্থায়ী শিবিরে থাকবে। পরে সেখানেই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তারা বাড়িঘর তৈরি করবে। এ জন্য রোহিঙ্গাদের অর্থ দেবে মিয়ানমার।
জানা গেছে, চীনের মধ্যস্থতায় যে আলোচনা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চলছে, সে অনুযায়ী প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৩০০ রোহিঙ্গাকে রাখাইনে ফিরিয়ে (প্রত্যাবাসন শুরুর প্রথম দিন থেকে) নেওয়া হবে।
তবে তিন দিন আগে (২২ আগস্ট) ইউএনএইচসিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, রোহিঙ্গারা যেন চাপে না পড়ে অথবা ভুল তথ্যের ফাঁদে পড়ে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত না নেয়। স্বাধীনভাবে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরের যুক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
তহবিলের জন্য দাতা সংস্থার কাছে যাওয়ার পরামর্শ
রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সংস্থাকে নিয়ে যৌথ সাড়াদান প্রকল্প বা জেআরপির আওতায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার মানুষের জন্য এ বছর ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ৯ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা) মানবিক সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত জেআরপির তহবিলের মাত্র ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ পাওয়া গেছে; যা একটি বৃহত্তর মানবিক সংকট রোধে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পূর্বাভাসযোগ্য আর্থিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকে হতাশাজনকভাবে তুলে ধরে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো প্রথম আলোকে জানিয়েছে, জেআরপির আওতায় চলতি বছরের মার্চ থেকে তহবিল–সংকট দেখা দেওয়ায় বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ এ বিষয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানাভাবে তুলে ধরছে। তহবিলসংকট থাকায় বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতো সংস্থা থেকে ঋণ নিতে এখন বাংলাদেশকে পরামর্শ দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। তারা বলেছে, শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক এসব সংস্থার বিশেষায়িত তহবিল থাকে। তবে বাংলাদেশ এই পরামর্শ নাকচ করে দিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য গড়া জেআরপির তহবিল–সংকট নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো এবং উন্নয়ন সহযোগীদের দায় এড়ানো এবং ঋণ নিতে পরামর্শ দেওয়ার বিষয়ে সাবেক একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক প্রথম আলোকে বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল–সংকট তৈরি হওয়া উদ্বেগের। উন্নয়ন সহযোগীরা যদি বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক ঋণদান সংস্থাগুলোর কাছে যেতে বলে সেটা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা উচিত। কারণ, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আর্থসামাজিক বিরাট ঝুঁকি তো বাংলাদেশ নিয়েছে। এখন অর্থের সংস্থানের দায়িত্ব নিতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে।
ভূরাজনীতির বৃত্তে রোহিঙ্গা সংকট
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর ঘিরে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা যে বেড়েই চলেছে, সেটা বলাই বাহুল্য। ভূরাজনৈতিক এই প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে গেছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়টিও। ২০১৭ সালের নভেম্বরে তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশের ও মিয়ানমারের চুক্তি সই থেকে শুরু করে সর্বশেষ চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ—এর অর্থ হচ্ছে চীন এই অঞ্চলের বাইরের কোনো পক্ষকে এখানে আসতে দিতে চাইছে না।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের নিকট প্রতিবেশী ভারতও চীনের কারণে শুধু মানবিক সহায়তা কার্যক্রমেই নিজেকে যুক্ত রেখেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার পরও ভারতের কাছ থেকে রোহিঙ্গা সংকটে সেভাবে রাজনৈতিক সমর্থন পায়নি বাংলাদেশ। ভবিষ্যতেও ভারত এ ক্ষেত্রে নাটকীয় কোনো ভূমিকা নেবে, এমনটি আশা করার কারণ নেই বলেই মনে করেন কূটনীতিকেরা।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য এতেও খুব বেশি নমনীয় করা যায়নি মিয়ানমারকে। কারণ, চীনের ‘প্রশ্রয়ে’ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করেই চলতে পারছে মিয়ানমার। এমন পরিস্থিতিতে চীনের উদ্যোগে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরোধিতা অব্যাহত থাকবে বলেই মনে করেন কূটনীতিকেরা। তাঁরা এটিও বলছেন, পশ্চিমাদের মনোযোগ এখন রোহিঙ্গা থেকে সরে গেছে। তারা মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে অন্য সমস্যায় পরে মনোযোগ দিতে চাইছে।
অন্যদিকে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী আন্দোলন জোরদারের পাশাপাশি দেশটির বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গা সংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি এখন আর কথার কথা নয়। ফলে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে অনিশ্চয়তা শিগগিরই কাটবে—এমন কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না।
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, অস্থায়ী ভিত্তিতে চীনের মধ্যস্থতায় পরীক্ষামূলকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করাটা দোষের কিছু নয়। তবে শুধু ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান বের করা খুব মুশকিল। প্রথমত, রোহিঙ্গারা এখন পর্যন্ত যেতে উৎসাহ পাচ্ছে না। আবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এটিকে সমর্থন করছে না। ফলে এই প্রক্রিয়ার সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।