ঢাকার বাজার
এক মাসে খোলা আটার দাম বেড়েছে ২৪%
মোটা চালের পর খোলা আটার মূল্যবৃদ্ধি ব্যয় আরও বাড়িয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। দাম কমেছে ডিম ও মুরগির।
ঢাকার বাজারে মোটা চালের কেজি ৫৫ টাকায় ওঠার পর এবার খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছে প্রতি কেজি ৫২-৫৫ টাকা। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে। অবশ্য দাম কমেছে ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও সবজির।
ঢাকার কারওয়ান বাজার, মালিবাগ ও মগবাজারের কাঁচাবাজার ও মুদিদোকান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আর কোনো পণ্যের দামে নতুন করে হেরফের হয়নি। তবে বেশির পণ্যের দাম আগে থেকেই চড়া।
ঢাকার বাজারে খোলা আটার দাম কতটা বেড়েছে, তা দেখা যায় সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকায়। সংস্থাটি বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বাজারে খোলা আটার দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা এক মাস আগের তুলনায় প্রায় ২৪ শতাংশ বেশি।
এদিকে বিপণনকারী দু-একটি কোম্পানি আটার দুই কেজির প্যাকেটের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ১২৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, অন্য কোম্পানির প্রতিনিধিরাও জানিয়ে গেছেন প্যাকেটজাত আটার দাম বাড়তে পারে। এর আগে আটার দুই কেজির প্যাকেটের খুচরা দর ছিল সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা। সেই হিসাবে প্যাকেটজাত আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বাজারে আটার দুই কেজির প্যাকেটের দাম ছিল ১০৪ টাকার আশপাশে। সে হিসাবে দাম বাড়ল প্রতি কেজি ১০ টাকার মতো। টিসিবি বলছে, খোলা ময়দার দামও বেড়েছে প্রায় ৮ শতাংশ।
কারওয়ান বাজারের লক্ষ্মীপুর স্টোরের বিক্রেতা কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে আটার দাম বাড়তি। খোলা আটার দাম বাড়ার পরে এখন প্যাকেট আটার দামও বাড়ছে। বেচাকেনা কম হওয়ায় বাড়তি দামের মাল দোকানে কম তুলছি।’
দেশে বছরে প্রায় ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদা আছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ লাখ টন আমদানি করতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে দেশের বাজারে আটার দাম বাড়ছে। টিসিবির হিসাবে, এক বছরে আটার দাম বেড়েছে প্রায় ৬৭ শতাংশ।
বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের প্রতি হালির দর নেমেছে ৪০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ছিল। দেখা যাচ্ছে, ডিমের দাম অনেকটাই কমেছে।
একই সঙ্গে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা দুই সপ্তাহ আগে ২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। অবশ্য এই মুরগি সাধারণত ১৪০ টাকা কেজির আশপাশে বিক্রি হয়।
বিপণনকারী কোম্পানিগুলো সোমবার সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৭ টাকা বাড়ায়। বাজারে তেল বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ নিত্যপণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের হয়নি। বেড়েছে শুকনা মরিচের দাম। প্রতি কেজি আমদানি করা শুকনা মরিচ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং দেশি মরিচ ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দুই ধরনের মরিচের দামই কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়েছে এক মাসে। মূল্যবৃদ্ধির কারণ আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়া।
সবজির দাম কমেছে, তবে হার বেশি হয়। বাজারে বেশির ভাগ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা।