চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
গাছের ধাক্কায় শাটল ট্রেনের ছাদে থাকা ১৫ শিক্ষার্থী আহত, উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর-আগুন
শাটল ট্রেনের ছাদে করে যাওয়ার সময় হেলে পড়া একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। এ ছাড়া অন্তত ২৪টি বাসে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার চৌধুরীহাট স্টেশন–সংলগ্ন এলাকায় শাটল ট্রেনের ছাদে থাকা শিক্ষার্থীরা গাছের সঙ্গে ধাক্কা খান।
ঝড়বৃষ্টির কারণে গাছ রেললাইনের ওপর হেলে পড়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, রাত সাড়ে আটটায় নগরের বটতলী থেকে ক্যাম্পাসে ছেড়ে আসা শাটল ট্রেনে অন্য সময়ের তুলনায় ভিড় বেশি হয়েছিল। নগরে টিউশনি ও খণ্ডকালীন চাকরি করা শিক্ষার্থীরা এই ট্রেনে ক্যাম্পাসে ফেরেন। ভিড়ের কারণে ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেকেই শাটল ট্রেনের ছাদে ওঠেন। রাতে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন ১৫ শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসাদ সোহাগ প্রথম আলোকে বলেন, ঝড়বৃষ্টির কারণে একটি গাছ রেললাইনের ওপর হেলে পড়েছে। সেই গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিন শিক্ষার্থী নিচে পড়ে যান। বাকিদের অনেকের মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। তাঁদের কয়েকজনকে বেসরকারি হাসপাতাল ফতেহপুর গ্রিন হেলথে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানতে চাইলে হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কাছে আটজন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের কারও জ্ঞান ছিল না। নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম রাত ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত ছয়জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আরও আসছেন।
আহত হওয়ার এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালিয়েছেন। রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক শ শিক্ষার্থী। এ সময় পুলিশ বক্সে শিক্ষার্থীরা এক দফা ভাঙচুর চালান। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে যান। তিনতলা বাসভবনে ভাঙচুর চালান শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে আসবাব বের করে বাসভবনের উঠানে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় ট্রেনে বগি বৃদ্ধি ও সূচি বাড়ানোর দাবি জানালেও প্রশাসন আমলে নেয়নি। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়ে ছাদে যাতায়াত করতে হয়।
উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর করার পরপরই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পরিবহন দপ্তরে মিছিল নিয়ে যান। পরে সেখানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যাতায়াতের জন্য রাখা অন্তত ২৪টি বাস এবং ১৫টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করেন।