২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ফুলে ফুলে ভরে উঠবে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ

মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের আগের সেই বেদনাময় দিনটি ফিরে এল। আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর হাতে নৃশংসভাবে প্রাণ হারানো দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করবে জাতি। রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও রায়েরবাজারে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ ভরে উঠবে নিবেদিত ফুলে ফুলে।

বাঙালির চিরগৌরবের অর্জন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সূর্য যখন উদিত হতে চলেছে, তখন নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে বাঙালিকে মেধা-মননহীন করে দেওয়ার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল নরঘাতক পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করেছিল এদেশি কতিপয় অনুচর। তারা দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, রাজনীতিকসহ মেধাবী সন্তানদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের তুলে আনে। এই কাজে তাদের সরাসরি সাহায্য করেছিল রাজাকারেরা। ঘাতকের দল বুদ্ধিজীবীদের গুম ও নির্মমভাবে হত্যা করে।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে রাজধানীর রায়েরবাজারে পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে জল্লাদখানায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হাত বাঁধা, নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া গেলে পাকিস্তানি ঘাতকদের বুদ্ধিজীবী হত্যার এই ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয়।  

বাসস জানায়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করেছেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেছেন, দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের নির্মম হত্যাকাণ্ড ছিল জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁদের আদর্শ অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। তিনি দলমত–নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একাত্তরের ঘাতক, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-মৌলবাদী চক্র এবং দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান জানান।

সরকারি কর্মসূচি

বাসস জানায়, আজ সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করবে।

এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

তা ছাড়া এদিন দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার শান্তি কামনা করে দেশের সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।