শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলকে রেড অ্যালার্ট জারির অনুরোধ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করতে রেড অ্যালার্ট জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গত রোববার এই অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) যেহেতু মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেন্ডিং আছে, কিন্তু বাংলাদেশের জুরিসডিকশনের বাইরে তিনি চলে গেছেন, সে কারণে আন্তর্জাতিক পুলিশিং সংস্থা হিসেবে ইন্টারপোল যাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করার ব্যবস্থা নেয় এবং তাঁর ব্যাপারে অন্তত রেড অ্যালার্ট জারি করে, সেই ব্যাপারে আমরা অনুরোধ পাঠিয়েছি।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে আজকে দুটি আবেদন তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর। তাঁর একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেনসহ চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং আপনাদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল যে একজন তরুণকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে যখন তাঁর সহকর্মী নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সে স্বাভাবিক অবস্থায় বেঁচেছিল, তাঁর পায়ে আঘাত ছিল সামান্য, সেই ছেলেটিকে কাছে গিয়ে বুকে গুলি করে হত্যা নিশ্চিত করে এবং লাশটিও নানাভাবে বিকৃত করে। সেটা হচ্ছে যাত্রাবাড়ী থানার তদানীন্তন ওসি জাকির হোসেন। তিনি এখন পলাতক। জাকির হোসেনসহ আরও চারজন পুলিশ কর্মকর্তা, যাঁরা যাত্রাবাড়ীর অ্যাট্রোসিটির (হত্যাযজ্ঞ) সঙ্গে জড়িত, যাঁদের বিরুদ্ধে আমরা অকাট্য প্রমাণ পেয়েছি—এ রকম চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়েছিলাম। আদালত সেটা মঞ্জুর করেছেন।’
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, হয়রানির শিকার হতে পারে ভেবে পুলিশ বাহিনী নানাভাবে দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করছে। কোনো নির্দোষ পুলিশ কর্মকর্তাকে হয়রানি করা হবে না বলে জানান তিনি। যাঁদের বিরুদ্ধে অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাঁরা কেউ ছাড় পাবেন না বলেও জানান।
দ্বিতীয় আবেদন প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম বলেন, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ এসেছে। তদন্ত সংস্থা অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ও গুমের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে বলে জানান তিনি। জিয়াউল আহসান এর মধ্যে ট্রাইব্যুনালের আদেশে গ্রেপ্তার আছেন। তাঁকে এক দিনের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল এবং আদালত অনুমতি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।