সরকারের সংস্কার উদ্যোগ : উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্রসচিবের ফলপ্রসূ বৈঠক

যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া (বাঁয়ে) ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিনছবি : বাসস

যুক্তরাষ্ট্রে সফররত পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন।

পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার বৈঠকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি, রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা ও টেকসই সমাধান এবং শ্রম অধিকার নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকটি গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার এক বার্তায় বলা হয়, বৈঠকটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উন্নয়ন এবং মানবাধিকারের মূল উদ্বেগ নিরসনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দৃঢ় ও ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।

রাজনীতি-বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আন্ডার সেক্রেটারি জন বাসের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের গতি প্রবাহে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নির্মাণকে আরও গভীর এবং অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রগুলোতে কার্যকর সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

পররাষ্ট্রসচিব মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী রিচার্ড ভার্মার সঙ্গেও একটি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন। এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর ও প্রসারিত করার প্রতিশ্রুতি নবায়ন, পারস্পরিক স্বার্থের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তাঁদের এই আলোচনা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, রোহিঙ্গা ইস্যু, শ্রম আইন সংস্কার ইত্যাদি বিষয়ে মার্কিন কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা কেন্দ্রিক ছিল।

হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর লিন্ডসে ডব্লিউ ফোর্ডের সঙ্গে বৈঠকে জসিম উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।

তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, রোহিঙ্গা সংকট এবং শ্রম আইন নিয়ে আলোচনা করেছেন।

পররাষ্ট্রসচিব দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডন লিঞ্চের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। এতে তাঁরা রপ্তানি বৈচিত্র্য আনতে পারস্পরিক সহযোগিতা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা থেকে উৎপাদিত আরএমজি খাতে ডিএফকিউএফ অ্যাক্সেস, রেজিস্ট্রেশন সহজীকরণ এবং ওষুধ পণ্যের জন্য নিবন্ধন ফি হ্রাস, শ্রম আইন সংস্কার এবং ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কো-অপারেশন (ডিএফসি) অ্যাক্সেস ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন।

এ ছাড়া পররাষ্ট্রসচিব এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তাদের মধ্যাহ্নভোজ বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যাম্বাসেডর ডোনাল্ড লু, ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মার্টা সি. ইয়ুথ, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক, ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মনিকা এগার জ্যাকবসেন এবং ডিরেক্টর আল্লা পি কামিনস মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।

পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন ওয়াশিংটন সফরের আগে নিউইয়র্ক গিয়েছিলেন। স্থানীয় সময় সোমবার (১৪ অক্টোবর) তাঁর ওয়াশিংটন ত্যাগের কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন