ঈদের ছুটিতে লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা নেই
ঈদের ছুটির আমেজ শুরু হয়ে গেছে গত শুক্রবার থেকেই। এরই মধ্যে শহর ছেড়েছে লাখো মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এতে করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের চাহিদা কমে গেছে। তাই ঈদের ছুটিতে লোডশেডিং হওয়ার তেমন আশঙ্কা নেই। বাসাবাড়িতেও রান্নার কাজে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকতে পারে।
যেকোনো ছুটির সময় বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে তেমন ঘাটতি থাকে না। তবে কয়েক দিন ধরে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের ছুটির সময় সাধারণত বিদ্যুতের চাহিদা ১০ হাজার মেগাওয়াটের নিচে নেমে যায়। এবার গরম আবহাওয়ার কারণে গড়ে সাড়ে ১০ থেকে ১১ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে চাহিদা। এই চাহিদা পূরণ করার মতো বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। তাই শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও স্বস্তিতে থাকবে। তবে বর্ষার এ সময়ে বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে যায়, তখন বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও উৎপাদনের তারতম্যের কারণে সাময়িক বিদ্যুৎ–বিভ্রাট হতে পারে কোথাও কোথাও।
পিডিবি ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্র বলছে, আজ রোববার সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার মেগাওয়াটের নিচে, সেটা মূলত শনিবার রাত ১২টার পর। এ চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করা গেছে। তবে দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট। শনিবার রাত ৮টার পর বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে কোথাও লোডশেডিং হয়নি।
সরকারি ছুটির সময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম পরিবীক্ষণের জন্য নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে কর্মকর্তাদের ভাগাভাগি করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এটি চালু থাকবে। তবে এ সময়ের বাইরেও ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে।
দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। সর্বোচ্চ ৩০০ থেকে ৩১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে মোটামুটি চাহিদা মেটানো যায়। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে দিনে গ্যাসের চাহিদা ২৩২ কোটি ঘনফুট। এবার গ্রীষ্মে পিডিবি অন্তত ১৫০ কোটি ঘনফুট সরবরাহের দাবি জানিয়েছে। সর্বোচ্চ ১৩০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে। চাহিদা কমায় এটি ১০০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে। ছুটিতে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাহিদা কমে এসেছে। তাই গৃহস্থালি রান্নার কাজে গ্যাসের সরবরাহ বাড়বে। এতে দিনের বেশির সময় গ্যাসের সংকটে থাকা শহরের মানুষ রান্নায় স্বস্তি পারে ছুটিতে।