আইনজীবী মহসিন রশিদ ও সাংবাদিক কনক সারোয়ারকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

দেশের বিচারব্যবস্থাকে খাটো করা ও সুপ্রিম কোর্টের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে কুৎসা রটানোর মাধ্যমে আদালত অবমাননায় আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ ও প্রবাসী সাংবাদিক কনক সারোয়ারের প্রতি আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু করেছেন আপিল বিভাগ।

আদালত অবমাননার জন্য কেন তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে না, এ বিষয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তাঁদের আগামী ২৯ আগস্ট আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অনলাইনে টক শোতে দেওয়া বক্তব্যের সূত্রে দুজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন। পরবর্তী শুনানির জন্য ২৯ আগস্ট দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। এই সময়ে আইনজীবী মহসিন রশিদকে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে আইন পেশা পরিচালনা করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী। আবেদনটি গত ২৬ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন। ধার্য তারিখে আপিল বিভাগ তাঁদের ২১ জুলাই আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। ওই  ভিডিও অপসারণ করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ২১ জুলাই আদালতে হাজির হন মহসিন রশিদ। সেদিন আদালত শুনানির জন্য ২৮ জুলাই দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। শুনানিতে গত ২১ জুন এক টক শোতে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে মহসিন রশিদ ও কনক সারোয়ারের এ-সংক্রান্ত বক্তব্যের ভিডিওর অংশবিশেষ আদালতকক্ষে সংযুক্ত স্ক্রিনে দেখানো হয়।

আজ আদালতে হাজির হন মহসিন রশিদ। তিনি বলেন, ‘আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি, আবেদন দায়ের করতে পারিনি।’ একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনি বারবার কথা বলবেন আর নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন। এটা কলম থেকে নাকি হৃদয় থেকে?’ ভিডিও অপসারণ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার তথ্য জানান বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। শুনানি নিয়ে পরে আদালত আদেশ দেন।

পরে আইনজীবী তাপস কান্তি বল প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৯ আগস্ট মহসিন রশিদ ও কনক সারোয়ারকে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ কনক সারোয়ার আদালতে হাজির হননি। যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে বা আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি আদালতে হাজির হচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তাঁর (কনক সারোয়ার) কনটেন্ট সরাতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

অবমাননার আবেদন দায়েরের পর এই আইনজীবী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চৌধুরী মঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের সুপ্রিম কোর্টে চৌধুরী মঈনুদ্দীন এবং দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যকার মামলায় সম্প্রতি রায় হয়। মঈনুদ্দীনের মানহানির মামলাটি চলবে বলে রায়ে এসেছে। এ নিয়ে সাংবাদিক কনক সারোয়ার ২১ জুন অনলাইনে টক শো করেন। সেখানে অতিথি ছিলেন আইনজীবী মহসিন রশিদ। টক শোতে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়া হয়। যে কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করা হয়।