সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান, ইকবালুর রহিম, লিয়াকত আলী, রফিকুল ও নুরুলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম এবং সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম ও তাঁর স্ত্রী নাদিরা সুলতানার বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এবং নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ রোববার এ আদেশ দেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান। আদালতে লিখিতভাবে বলা হয়, সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের বিরুদ্ধে নিয়োগ–বাণিজ্য, ভুয়া রোগী সাজিয়ে সরকারি অনুদানের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, করোনাকালে ভুয়া প্রশিক্ষণ বিল উত্তোলন, ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে টিআর–কাবিখাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। নুরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
অন্যদিকে সাবেক সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী। লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, ইকবালুর রহিমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং বিভিন্ন অনিয়ম–দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। লিখিতভাবে আদালতকে জানানো হয়, লিয়াকত আলী লাকির বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ-বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম–দুর্নীতিসহ ভুয়া বিল–ভাউচারের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।
রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক নুর-ই আলম। এতে বলা হয়, রফিকুল ইসলামসহ অন্যদের বিরুদ্ধে জাল–জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে আগের বিক্রি করা জমি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে ২৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি যেকোনো সময় দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।
নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান। তিনি আদালতের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ঋণ গ্রহণ করে সাত হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। তিনি যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে।